আলমগীর সিকদার, টঙ্গী (গাজীপুর) থেকেঃ বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ছাত্রদের নাম ভাঙ্গিয়ে নামধারী কথিত ছাত্রদের অযৌক্তিক দাবির মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন গাজীপুরের টঙ্গীর স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন এন্ড কলেজের সম্মানিত অধ্যক্ষ মোঃ ওয়াদুদুর রহমান।
গত কয়েকদিন যাবৎ বহিরাগত কিছু কথিত ছাত্ররা ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে অধ্যক্ষ ওয়াদুদুর রহমানের পদত্যাগের অযৌক্তিক দাবি তুলেন। এসময় তারা অধ্যক্ষের অফিস রুমের সামনে বাধানো অধ্যক্ষের ন্যামপ্লেট ভেঙে ফেলে।
গত সোমবার পুনরায় ওইসব নামধারী ছাত্ররা ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে অযৌক্তিক পদত্যাগের দাবি সহ উগ্র পন্থায় আচরণ করলে বাধ্য হয়ে সাদা কাগজে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতি বরাবর একটি পদত্যাগের আবেদন পত্র লিখে দেন অধ্যক্ষ ওয়াদুদুর রহমান। কিন্তু ওই আবেদন পত্র এখন পর্যন্ত ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গভর্নিং বডির সভাপতি রিসিভ করে নি বলে জানা যায়। এসময় স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা ওইসব নামধারী ছাত্রদের কাছে তাদের দাবির ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা কোন যৌক্তিক কাগজপত্র দেখাতে পারেনি এবং কোন সুউত্তর না দিয়ে বরং উল্টো গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে অসুন্দর্যমুলক আচরণ করে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এ ব্যাপারে শিক্ষকগণ ও অভিভাবকগণেরা ক্ষোভের সাথে বলেন, নোংরা রাজনীতির শিকার হলেন অধ্যক্ষ ওয়াদুদুর রহমান। তিনি একজন সুদক্ষ, যোগ্য ও প্রতিভাবান শিক্ষক। তার সুদক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতার কারণে দেশ বিদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা থেকে তিনি পুরস্কৃত হয়েছেন। তিনি গাজীপুরে স্কাউট এসোসিয়েশনে সহ সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তার নেতৃত্বে স্কাউট ছাত্র ছাত্রীরা অনেক দক্ষতা অর্জন করেছেন। তার অগ্রণী ভূমিকায় আজ সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন এন্ড কলেজের পড়ালেখার মান উন্নতি হয়েছে।
এছাড়াও ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যাবতীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের অগ্রগতির জন্য তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। এসময় তারা আরও বলেন, নোংরা রাজনৈতিক কিছু ব্যক্তির নির্দেশে ওইসব বহিরাগত নামধারী ছাত্ররা কয়েকদিন যাবৎ ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে অধ্যক্ষের পদত্যাগের অযৌক্তিক দাবি তুলেন। এতে ক্ষুদ্ধ হয়েছেন অত্র প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষিকা, ছাত্রছাত্রীরাসহ অভিভাবকগণেরা।
এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
ফেসবুকে কেএইচ এ হাছিব লিখেছেন, টঙ্গীর সিরাজ উদ্দিন স্কুলের একজন আদর্শবান প্রধান শিক্ষক পদত্যাগ করায় আমি গভীরভাবে মর্মাহত। টঙ্গীর সিরাজ উদ্দিন স্কুল অনেক পিছিয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস।
ফারহান আহমেদ পাপেল লিখেছেন, ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক ভালো মানুষ ছিলেন।
ইমতিয়াজ আহমেদ লিখেছেন, স্কুল ২০ বছর পিছিয়ে গেল। শিক্ষার্থীরা বুঝবে। স্যারকে ফিরিয়ে আনা হউক। এমনই ভাবে রিতু আক্তার রিপা খানও লিখেছেন, স্কুল ২০ বছর পিছিয়ে গেল। শিক্ষার্থীরা বুঝবে। স্যারকে ফিরিয়ে আনা হউক।
এ ব্যাপারে গভর্নিং বডির সভাপতি এড. আজমত উল্লা খানের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।