এশিয়ান টিভির সাইফুল ইসলাম ও তার সহযোগী গ্রেফতার

0
196

মাদারীপুর প্রতিনিধি: সাংবাদিক পরিচয়ে আশ্রয় নিয়ে সাংবাদিক দম্পতিকেই প্রতারণার ফাঁদে ফেলে সর্বনাশের অভিযোগে সাইফুল ইসলাম ও রিয়াজুল ইসলাম ওরফে আব্দুস ছালাম নামে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তারা নারী সাংবাদিকের ছবি সংগ্রহ করে নিচের অংশে নগ্ন চিত্র যুক্ত করে ছড়িয়ে দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইন পোর্টালে। এরপর পাঁচ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে সীমাহীন মানসিক যন্ত্রণায় ওই সাংবাদিক দম্পতির ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবন বিপর্যস্ত করে দিয়েছে বলে অভিযোগ সাংবাদিক দম্পতির।

মাদারীপুর জেলা সদরে এ ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটিয়েছে এশিয়ান টিভির সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম খান ও তার সহযোগি মানব কন্ঠের সাব এডিটর পরিচয়দানকারি রিয়াজুল ইসলাম ওরফে ছালাম। তারা মাদারীপুর প্রেসক্লাব নামে একটি ভুয়া ফেজবুক আইডি খুলে মিথ্যা অপপ্রচার চালায়। এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। সেই প্রেক্ষিতে মাদারীপুর সদর মডেল থানার পুলিশ গতকাল রাতে ঢাকার সাভার ও গুলশান থেকে অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম খান ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী রিয়াজুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, সাংবাদিক দম্পতির সাথে পরিচয়ের সুত্রে কৌসলে পরস্পর যোগসাজসে হঠাৎ বাসায় আসেন। সরল বিশ্বাসে মেহমান হিসেবে আপ্যায়ন করে বাসায় থাকতে দেয়। বাসায় অবস্থানকালে তাদের অনুমোতি ছাড়াই রাতে ব্যক্তিগত মোবাইল ও ল্যাপটপে থাকা ব্যাক্তিগত কিছু ছবি তথ্য ও উপাত্ত ফেজবুক মেইলের পাসওয়ার্ড সুকৌসলে নিয়ে যায়। কিছুদিন পরে সাংবাদিক দম্পতির ফেজবুক মেসেঞ্জার ও হোয়টস আপে আপত্তিকর কিছু ছবি পাঠিয়ে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করে। একপর্যায় টাকা না পেয়ে হোয়াটসআপ, ফেজবুক ও নাম সর্বস্ব কয়েকটি অনলাইন পোর্টালে সাংবাদিক দম্পতির ব্যক্তিগত ছবি ছড়িয়ে দিয়ে তাদেরকে ব্ল্যাকমেইল করে। এ চক্রের মূল হোতা সাইফুল ইসলাম খানের (৩৬) বাবার নাম সিরাজ খান, মাতা: মোসাম্মৎ সাহেরা বেগম, বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সদর থানাধীন যোদ্ধা করিসিং গ্রামে এবং তার প্রধান সহযোগী রিয়াজুল ইসলাম চৌধুরী ওরফে ইসলাম চৌধুরী (৩৮) পরিচয় দেয়া ব্যক্তির নাম আঃ ছালাম, পিতা ওয়াজেদ আলী, মাতা জোহরা বেগম, তার বাড়ি ঝালকাঠি সদরের কলেজ রোড।

এ বিষয়ে রোববার (৯ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় মাদারীপুর মডেল থানার অফিসার্চ ইনচার্জ মোঃ মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, সাংবাদিক দম্পতির ল্যাপটপ থেকে তাদের স্বামী স্ত্রীর বিভিন্ন ছবি, ভিডিও চুরি করে আনে তারা। ঢাকায় ফিরেই নারী সাংবাদিকের বিভিন্ন ছবির নিচের অংশে নানা নগ্ন দৃশ্য সংযোজন করে তা পাঠিয়ে দেয় তার স্বামীর ইনবক্সে। এরপর সাইফুল ইসলাম ও রিয়াজুল নানারকম ভয়ভীতি দেখায়। একপর্যায়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং তা ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পরিশোধ না করলে নগ্ন দৃশ্যাবলী অনলাইনে ছড়িয়ে দেয়ারও হুমকি দেয় তারা এবং মানসিক চাপ ও ভীতি সৃষ্টির লক্ষ্যে কিছু নগ্ন ছবি ওই সাংবাদিক দম্পতির পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশী ঘনিষ্ঠজনদের কাছে পাঠিয়েও দেয়। পরে মাদারীপুর মডেল থানার টিম অভিযানে নামে এবং ঢাকা, সিঙ্গাইরসহ বিভিন্ন স্থানে টানা ১০ ঘন্টা অভিযান চালিয়ে সাইফুল ইসলাম খান ও তার সহযোগী রিয়াজুল ইসলামকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তাদের কম্পিউটারে রক্ষিত আলামত জব্ধ করা হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here