এফআইআর টিভি ডেস্ক রিপোর্ট: কবি, গল্পকার ও গীতিকার জাহিদুল হক (৭৫) সোমবার দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন (ইন্না লিল্লাহে…… রাজিউন)। মৃত্যুকালে তিনি অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। ১৯৪৯ সালের ১১ অগাস্ট ভারতের আসামের বদরপুরে জাহিদুল হকের জন্ম। তাঁর চিকিৎসক বাবা তখন সেখানে রেলওয়ে হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। তাঁদের বাড়ি কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুণবতী ইউনিয়নের আকদিয়া গ্রামে। কবি জাহিদুল হকের মৃত্যুতে জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মুহাম্মদ সামাদ ও সাধারণ সম্পাদক কবি তারিক সুজাত গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। চট্টগ্রামের নগেন্দ্রচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৩ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন জাহিদুল হক। ১৯৬৭ সালে ফেনী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ সালে স্নাতক ডিগ্রি পান। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে এমএ করেন। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত ডয়চে ভেলে রেডিওর সিনিয়র এডিটর ও ব্রডকাস্টার হিসেবে কাজ করেন জাহিদুল হক। দৈনিক সংবাদে কাজ করেছেন সিনিয়রসহ সম্পাদক হিসেবে। বাংলাদেশ বেতারে উপ- মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। জাহিদুল হক ‘বেতার বাংলা’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। টানা চার বছর তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনে ‘চিরশিল্পের বাড়ি’ নামে একটি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেছেন। তাঁর প্রকাশিত কবিতা গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- পকেট ভর্তি মেঘ, তোমার হোমার, নীল দূতাবাস, সেই নিঃশ্বাসগুচ্ছ, পারীগুচ্ছ ও অন্যান্য কবিতা, এই ট্রেনটির নাম গার্সিয়া লোরকা, এ উৎসবে আমি একা: গল্প গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ব্যালকনিগুলো, আমার ভালোবাসার অটম: উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে তোমার না আসার বার্ষিকী, আমজাদ আলির মেঘবাড়ি। সাহিত্যচর্চার স্বীকৃতিতে জাহিদুল হক ২০০০ সালে জসীমউদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার এবং ২০০২ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পান। এছাড়া গীতি কবিতার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ থেকে ২০১৭ সালে পান বিশেষ সম্মাননা। তাঁর মতো একজন শান্তিপ্রিয় মানুষের চলে যাওয়া দেশের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছে দেশের সকল কবি ও কবিতানুরাগী।