করোনা সংকট মোকাবেলায় চ্যালেঞ্জ উত্তরণে ১০ দফা সুপারিশ টিআইবির

0
326

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিঃ তহবিল সংকটসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও, করোনা সংকট মোকাবেলায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে বেসরকারি সংস্থাসমূহ। ‘করোনা সংকট মোকাবেলায় সাড়াদানকারী বেসরকারি সংস্থাসমূহের ভূমিকা: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ১৩ জানুয়ারি (আজ) এমন মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। তবে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সামনে আসা চ্যালেঞ্জ উত্তরণে দশ দফা সুপারিশও প্রদান করেছে সংস্থাটি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপদেষ্টা-নির্বাহী ব্যবস্থাপনা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, গবেষণা ও পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান। প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন টিআইবির গবেষণা ও পলিসি বিভাগের রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান সাখিদার। এই গবেষনাটি তত্ত্বাবধান করেছেন একই বিভাগের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো শাহজাদা এম আকরাম। সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের কো-অর্ডিনেটর মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।
সরকারের বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক নিবন্ধিত কেবলমাত্র করোনা সংকট মোকাবেলায় সাড়াদানকারী বেসরকারি সংস্থাসমূহই এই গবেষণার আওতাভুক্ত ছিল। গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, কোভিড-১৯ সংকট মোকাবেলায় সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে অংশীজন হিসেবে বেসরকারি সংস্থাসমূহ তাদের কোভিড-১৯ সংক্রান্ত তহবিল ও চলমান প্রকল্পের তহবিল ছাড়াও সাধারণ তহবিল হতে ত্রাণ ও খাদ্য সহায়তা, নগদ অর্থ বিতরণ, সচেতনতামূলক কার্যক্রম, স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষাসামগ্রী প্রদান, লাশ দাফন ও সৎকারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্রুততার সাথে সাড়া প্রদান করে। সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ হতে প্রান্তিক ও নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর মধ্যে ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাগুলো তুলনামূলক বেশি কার্যকর ছিল। নিয়মিত আয়ের উৎস না থাকা, দাতা সংস্থা কর্তৃক তহবিল হ্রাস এবং ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হওয়ায় করোনা সংকট মোকাবেলায় কর্মসূচি বাস্তবায়নে সংস্থাগুলোর তহবিল সংকট ছিল মূল চ্যালেঞ্জ। অন্যদিকে করোনা অতিমারীর সময়েও ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে উপকারভোগীর তালিকা প্রণয়নে স্থানীয় ক্ষমতাশীলদের নেতিবাচক প্রভাব ছিল। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া অধিকাংশ বেসরকারি সংস্থার করোনা কর্মসূচি সংক্রান্ত তহবিল সংগ্রহ ও ব্যয়ে তেমন কোনো অনিয়ম চিহ্নিত না হলেও স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশের ঘাটতি ছিল। করোনাকালীন বিভিন্ন মেয়াদে ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি আদায় বন্ধ রাখার নির্দেশনা থাকলেও বেশ কিছু সংস্থার বিরুদ্ধে কিস্তি আদায়ে চাপ প্রয়োগের অভিযোগ পাওয়া যায়। করোনাকালীন প্রাথমিক পর্যায়ে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সমন্বয়হীনতা দেখা গেলেও পরবর্তীতে স্বাস্থ্যসেবা, ত্রাণ বিতরণসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে সমন্বয়ের উন্নয়ন ঘটলেও বেসরকারি সংস্থা ও তদারকি সংস্থার অভিযোগ নি®পত্তি ব্যবস্থায় ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়।
গবেষণায় অংশগ্রহণকারী সংস্থাসমূহের ৭৭.৫% শতাংশ প্রতিষ্ঠান প্রথম তিন মাসের মধ্যে (মার্চ’২০-মে’২০) কোভিড-১৯ সংক্রান্ত কার্যক্রম শুরু করে এবং করোনা মোকাবেলার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ২০২০ সালের জানুয়ারিতেই জাতীয় পর্যায়ের কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা নিজ উদ্যোগে প্রস্তুতি ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করে। করোনা সংকট মোকাবেলায় বেসরকারি সংস্থাগুলো সচেতনতা বৃদ্ধি, প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরামর্শ, স্বাস্থ্যসেবা প্রদান, খাদ্য সহায়তা, সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ, ত্রাণ সহায়তা, করোনা আক্রান্ত মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন/সৎকার, নগদ অর্থ সহায়তা, পরিবর্তিত আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি বিষয়ক গবেষণা ইত্যাদি উদ্যোগ ও কার্যক্রম গ্রহণ করে। জরিপে অংশগ্রহণকারী ৯৭.৩ শতাংশ সংস্থা সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ করে সচেতনতামূলক কার্যক্রম, ৫৫.৪ শতাংশ সংস্থা খাদ্য ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম, ৩৬.৫ শতাংশ সংস্থা স্বাস্থ্যসেবা প্রদান কার্যক্রম,  প্রায় ৮৩ শতাংশ সংস্থা সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করে এবং কিছু বেসরকারি সংস্থা হতে খাদ্য সামগ্রীর পাশাপাশি ত্রাণ প্যাকেজও বিতরণ করে। এছাড়া, জরিপে অংশগ্রহণকারী ৫৬.৮ শতাংশ (৪২টি) প্রতিষ্ঠান করোনাকালে দুঃস্থ ও অসহায় মানুষকে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করে। কিছু প্রতিষ্ঠান কর্মীদের ১ দিনের বেতন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দান করে। করোনা সংকটের শুরুর দিকে দুইটি এনজিও প্রায় ৬০ কোটি টাকা নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে অন্যান্য খাত/প্রতিষ্ঠানের চেয়ে ক্ষুদ্রঋণ সংস্থা তুলনামূলকভাবে অধিক কার্যকরভাবে প্রান্তিক ও নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর মধ্যে ঋণ বিতরণ করে। এছাড়া, গবেষণায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ৬৮% সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমে সহায়ক অংশীজন হিসেবে কাজ করে, যাদের মধ্যে ৯২ শতাংশ প্রতিষ্ঠানই সরকারের করোনাবিষয়ক সচেতনামূলক কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছিল। এছাড়া ৬৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠান ত্রাণ বিতরণ এবং ৪৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠান আর্থিক সহয়তামূলক, প্রায় ৩০ শতাংশ করোনা সংক্রান্ত স্বাস্থ্যসেবা এবং ৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠান করোনায় মৃত ব্যক্তিদের সৎকার সংক্রান্ত কার্যক্রমে সরকারের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে কাজ করেছে।
গবেষণায় অংশ নেওয়া বেসরকারি সংস্থাগুলোর ৬৬.২ শতাংশ প্রতিষ্ঠান করোনা পারিস্থিতিতে কোনো না কোনো ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। ৩৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের চলমান প্রকল্পগুলো থেকে করোনার সময়ে দাতা সংস্থাগুলো গড়ে প্রায় ২৫% তহবিল হ্রাস করে, ফলে এর ৮৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের প্রকল্পের ব্যয় সংকোচন করতে হয়। তখন চলমান প্রকল্প স্থগিত করে, কর্মীদের বেতন ভাতা কমিয়ে অথবা কর্মী ছাঁটাই করে তাদেরকে সংকুচিত তহবিলের সাথে সমন্বয় সাধন করতে হয়েছে। ক্ষুদ্রঋণ কেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এই সময়ে আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়তে হয়েছে। অন্যদিকে জরিপে অংশগ্রহণকারী অর্ধেকেরও বেশি (৫৩%) সংস্থা উপকারভোগী নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। বেসরকারি সংস্থাগুলোর ১৮.৩ শতাংশ তাদের কার্যক্রম বাস্তবায়নের বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা এবং স্থানীয় ক্ষমতাশালীদের প্রভাবের শিকার হয়েছে। আবার, গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত দুইটি প্রতিষ্ঠান জেলা প্রশাসন কর্তৃক উপকারভোগীর তালিকা প্রণয়নের ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ করে। এছাড়া, গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত ৪১ শতাংশ প্রতিষ্ঠান দুর্গম এলাকায় ত্রাণ পৌঁছানোর ক্ষেত্রে এবং প্রায় ২৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান কর্মসূচি বাস্তবায়নে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অসহযোগিতার মতো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে।
তদারকি প্রতিষ্ঠানের মুখ্য তথ্যদাতাদের মতে বেসরকারি সংস্থাগুলোর তহবিল সংগ্রহ ও ব্যয়ে তেমন কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া না গেলেও, গবেষণার অন্যান্য সূত্রানুসারে একটি এনজিওর ক্ষেত্রে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে আত্মসাৎ-এর গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত বেসরকারি সংস্থাসমূহের উপকারভোগীর ১৪ শতাংশ (৮১ জন) সাহায্য পাওয়ার জন্য কোনো না কোনো বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার তালিকাভুক্ত হয়েছিল। এদের মধ্যে ৩২.২ শতাংশ তালিকা প্রণয়নের ক্ষেত্রে অনিয়ম এবং ২০ শতাংশ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে তদবিরের অভিযোগ করেছেন। এছাড়া, কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া অধিকাংশ সংস্থারই করোনাকালীন গৃহীত কর্মসূচির ধরন, আওতা, ব্যয়, উপকারভোগীর তথ্য সংস্থার ওয়েবসাইটে পরিপূর্ণভাবে প্রকাশ করা হয়নি। আবার অন্যদিকে করোনাকালীন বিভিন্ন মেয়াদে ক্ষুদ্রঋণের কিস্তি আদায় বন্ধ রাখা ও সুবিধাজনক সময়ে ঋণ বা কিস্তি পরিশোধের নির্দেশনা থাকা সত্তে¡ও ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাগুলোর একাংশ কর্তৃক ঋণের কিস্তি আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এছাড়া করোনাকালীন সংকট মোকাবেলার প্রাথমিক পর্যায়ে কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নে স্থানীয় পর্যায়ে সমন্বয়হীনতা ছিল লক্ষণীয়। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধি পেয়েছে। গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত ৬৮ শতাংশ সংস্থা বলেছে তারা সরকারের অংশীজন হিসেবে বিভিন্ন ধরনের কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। অতিমারীর সময়ে প্রকল্প অনুমোদন ও বাজেট অনুমোদনের ক্ষেত্রে এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর অনলাইন কার্যক্রম প্রথমদিকে সাময়িকভাবে বাধাগ্রস্ত হলেও অনলাইন কার্যক্রমের কারণে প্রকল্প ও বাজেট অনুমোদন কার্যক্রম যথাযথভাবে পরিচালিত হয়েছে। এনজিও বিষয়ক ব্যুরো মার্চ ২০২০ থেকে জুন ২০২১ পর্যন্ত মোট ১৭৮টি এনজিও’র ২২৮ টি প্রকল্পের (এফডি-৭) বিপরীতে দাতা সংস্থা কর্তৃক প্রদত্ত মোট ৪২৬ কোটি টাকা অনুমোদন ও অর্থ ছাড় করে।
করোনা মহামারি মোকাবেলায় সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “গবেষণায় আমরা দেখেছি, তহবিল সংকটসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও, করোনা সংকট  মোকাবেলায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো শুদ্ধাচার বজায় রেখে মানুষের জন্য বিভিন্ন  মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পেরেছে। কিছু কিছু অনিয়মের অভিযোগ থাকলেও সার্বিকভাবে অবৈধ আর্থিক লেনদেনের উল্লেখযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে করোনাকালে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সহায়তা কার্যক্রমের ক্ষেত্রে তহবিল সংকট ছিল মূল চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে দাতা সংস্থার একাংশ কর্তৃক অর্থ সহায়তা সংকোচন করার কারণে অনেক বেসরকারি সংস্থাকেই কর্মসূচী স্থগিত বা বাতিল, কর্মীদের বেতন হ্রাস, এমনকি কর্মী ছাটাইয়ের মতো পদক্ষেপ নিতে হয়। ভবিষ্যতে মহাামারির মত পরিস্থিতিতে শুদ্ধাচার বজায় রেখে নিজস্ব দক্ষতা কাজে লাগিয়ে যথাযথ ভূমিকা পালনে সংস্থাগুলো যেন পর্যাপ্ত তহবিল পায় তা নিশ্চিত করতে সরকার ও দাতা সংস্থার উদ্যোগে দুটি পৃথক আপৎকালীন সহায়তা তহবিল গঠন করতে হবে।”
২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর সময়কালে গুণবাচক ও পরিমাণবাচক উভয় পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করে গবেষণাটি করা হয়। প্রত্যক্ষ তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে নির্বাচিত বেসরকারি সংস্থাসমূহের প্রধান নির্বাহী বা সংশ্লিষ্ট অন্য কর্মকর্তাবৃন্দ এবং উপকারভোগীদের উপর দুটি পৃথক জরিপ পরিচালনা করা হয়। সারা দেশের ৪৪টি জেলায় কার্যক্রম পরিচালনকারী ৭৪টি আন্তর্জাতিক, জাতীয় এবং স্থানীয় সংস্থাগুলো দৈবচয়নের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে জরিপে অংশ নেয়। পাশাপাশি টিআইবি পরিচালিত জাতীয় খানা জরিপ ২০১৭ অনুযায়ী বেসরকারি সংস্থা হতে সেবাগ্রহণকারী থেকে বাছাইকৃত ৫৮৯ জন উপকারভোগীর সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়। গবেষণায় শুদ্ধাচারের চারটি নির্দেশক-স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, অংশগ্রহণ ও সমন্বয় এবং দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের ওপর ভিত্তি করে তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট সংকট মোকাবেলায় সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাসমূহের কার্যকর অংশগ্রহণ এবং বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ থেকে উত্তরণে দশ দফা সুপারিশ প্রদান করেছে টিআইবি, উল্লেখযোগ্য সুপারিশসমূহ হলোÑ করোনাকালে তৃণমূল পর্যায়ে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাসমূহের বিভিন্ন কার্যক্রমের (সচেতনতা বৃদ্ধি, খাদ্য সহায়তা, স্বাস্থ্যসেবা, নগদ অর্থ সহায়তা এবং ত্রাণ তৎপরতা) ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং সমন্বয় সাধন; বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কর্তৃক করোনাকালীন গৃহীত কর্মসূচির ধরন, আওতা, ব্যয়, উপকারভোগীর তথ্য ইত্যাদি স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে পরিপূর্ণভাবে প্রকাশ ও নিয়মিতভাবে হালনাগাদ করা; করোনাকালীন মাঠ পর্যায়ে বেসরকারি সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত কার্যক্রম বিশেষত উপকারভোগীদের ত্রাণ সংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণ ও নিষ্পত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং তদারকি সংস্থা কর্তৃক মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা; কার্যক্রম বাস্তবায়নে সমন্বয়হীনতা নিরসনে তদারকি সংস্থা কর্তৃক উপকারভোগীদের তথ্য সংবলিত একটি সমন্বিত ডাটাবেজ ও ডিজিটাল ম্যাপ তৈরি করা ইত্যাদি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here