মোঃ আব্দুল হান্নান, বিশেষ প্রতিনিধিঃ ব্রাহ্মণ্যবাড়ীয় জেলার নাসির নগর উপজেলায় ১০ই এপ্রিল দিবাগত সোমবার রাত অনুমান ৩ ঘটিকার সময় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কাল বৈশাখী ঝড় ও শীলাবৃষ্টিতে লন্ডভন্ড হয়ে পড়েছে নাসিরনগর।ঝড়ের কবলে পড়ে অনেক কাচা ঘরবাড়ি,গাছপালা,দোকানপাঠ,মসজিদ,স্কুল,ইউনিযন পরিষদ,মোরগের খামারও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে।গাছপালা ভেঙ্গেপড়ে অনেক রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল ব্যহত হয়ে পড়ে।শীলাবৃষ্টি পড়ে খামারের অনেক মোরগ মরে গেছে।শীলাবৃষ্টির ফলে হাওড়ে পাকা বুরোধান ঝড়েপরে কৃষকের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,চাতলপাড়,গোয়ালনগর,কুন্ডা,নাসিরনগর সদর বুড়িশ্বর ও পূর্বভাগ,ভলাকুট ইউনিয়নে ক্ষতির পরিমান অনেক বেশী হয়েছে।
বেরুইন গ্রামের পল্লী চিকিৎসক মোঃ রফিকুল ইসলাম খান জানান,ঝড়ো হাওয়া তার নিজের ঘর সহ বেরুইন মধ্যপাড়া জামে মসজিদটি ভেঙে চাল উড়িয়ে নিয়ে গেছে।
ভলাকুট ইউনিয়নের খাগালিয়া গ্রামের পোল্ট্রি খামারী মোঃ সুরুজ মিয়া জানায়,ঝড়ো হাওয়ার ফলে তার সহ গ্রামের বরকত উল্লাহ ও মিজান মাষ্টারের ৩ টি পোল্ট্রি খাঁমার ভেঙ্গে চাল উড়িয়ে নিয়ে গেছে।শীলা বৃষ্টির ফলে খাঁমারের সব মোরগ মরে গেছে।এতে ৩ খাঁমারীর প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
সরেজমিন আকাশী হাওড়ে গিয়ে শীলাবৃষ্টিতে জমির ধান চলে যাওয়া বেলুয়া গ্রামের মঙ্গল মিয়ার স্ত্রী আরা বেগমকে বার বার বিলাপ করে কান্না করতে দেখা গেছে।আরা বেগম জানায়,২ লক্ষ টাকা ঋণ করে তার ছেলেরা ১৪ খানি জমিতে ধান চাষ করেছিল।শীলাবৃষ্টির ফলে সব ধান নষ্ট হয়ে গেছে।এখন ছেলে মেয়েদের নিয়ে কি খেয়ে বেচে থাকবে বলে বার বার কান্না করে বিলাপ করছিলেন ওই মহিলা।
ভলাকুট ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ রুবেল মিয়া জানায় ঝড়ে তার ইউনিয়নে প্রায় আড়াইশ কাচা ঘরবাড়ি,বাজারে দোকানপাঠ,স্কুল ও ইউনিযন পরিষদ ভেঙ্গে ব্যপক ক্ষতি হয়েছে।তাছাড়াও শীলা বৃষ্টির ফলে তার এলাকার প্রায় ৩শ একর বুরো জমির পাকা ধান ঝড়েপড়ে গিয়ে ব্যপাক ফসলহানি হয়েছে।
পূর্বভাগ ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আক্তার মিয়া জানায় তার ইউনিয়নে আকাশী হাওড়ে প্রায় ৩/৪ শ খানি জমির পাকা ধান শীলা বৃষ্টিতে বিনষ্ট হয়ে গেছে।
উপজেলা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার জানান,ঝড়ের কারনে বেশ কয়েকটি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙ্গে ও তার ছিঁড়ে গেছে।ফলে সারাদিন বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্চিন্ন রয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান,এ পর্যন্ত প্রায় আড়াইশ কাচাঘর,দোকান,স্কুল,মসজিদ ও খামারের তালিকা তার হাতে এসে পৌছেছ।তবে পুঁনাঙ্গ তালিকা করতে আরো প্রায় ২/৩ ঘন্টা সময় লাগবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আবু সাঈদ তারেক বলেন এ পর্যন্ত আমরা ১২০ হেক্টর বা ৮৫০ খানি জমির তালিকা করতে পেরেছেন।তিনি বলেন ব্রি আটাশ ও ব্রি ঊনত্রিশ ধানের বেশী ক্ষতি হয়েছে বলে দাবী করেন এ কর্মকর্তা।তাছাড়াও তিনি বলেন শীলাবৃষ্টির কারনে টান জমির ধানে ছিঁটা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।