প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ মিডিয়া এডুকেটরস নেটওয়ার্কের বিবৃতি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিপীড়নের ঘটনায় তদন্ত জরুরি।
সম্প্রতি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির ঘটনায় উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন নিরোধ কমিটি যে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে, তাতে মিডিয়া এডুকেটরস নেটওয়ার্ক হতবাক ও ক্ষুব্ধ।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায় যে, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের একজন নারী শিক্ষক একই বিভাগের একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি, শারীরিক ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগ করেন। সেই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন নিরোধ কমিটি অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কিন্তু ঘটনার ১০ মাস পর নিরোধ কমিটি বলছে, তারা সে অভিযোগ আমলেই নেয়নি। তাদের বক্তব্য, ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে ঘটেছে; ফলে তাদের তা এখতিয়ারভুক্ত নয়। একই সঙ্গে প্রতিবেদনটিতে তারা বলেন যে, এ ঘটনায় শারীরিক ও মানসিক নিপীড়নের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে গত ৮ জুন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট অভিযুক্ত শিক্ষকের বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন নিরোধ কমিটির প্রতিবেদন ও বক্তব্যে স্ববিরোধিতা রয়েছে। একদিকে তারা বললেন, ঘটনাস্থল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের বলে তাদের আওতাভুক্ত নয়। অন্যদিকে অভিযোগের পক্ষে প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে অভিযুক্তকে রেহাই দেওয়ার সুপারিশ করলেন।
আমরা বলতে চাই, ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে ঘটেছে বলে তদন্ত এড়ানোর সুযোগ নেই। যেহেতু দুজন শিক্ষকই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকুরীজীবি, সেহেতু ঘটনাস্থল যেখানেই হোক না কেন; বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ঘটনাটির তদন্ত করতে হবে। আর যৌন হয়রানির ঘটনায় অভিযোগকারী যখনই অভিযোগ করুক না কেন, অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত করতে হয়। ফলে সময়ের দোহাই দিয়েও ঘটনাটি এড়ানোর সুযোগ নেই।
দ্বিতীয়ত, অভিযোগটি আওতাভুক্ত কি না, সেটি বুঝতে কমিটির ১০ মাস সময়ের প্রয়োজন হয় না। কারণ অভিযোগপত্রে ঘটনাস্থলের কথা উল্লেখ ছিল। তদন্ত কমিটির প্রধান সে সময়ে গণমাধ্যমে তদন্ত নিয়ে বক্তব্যও দিয়েছেন। কমিটি তিনবার ভিকটিমকে ডেকে নিয়ে স্বাক্ষ্য নিয়েছে। তার কাছ থেকে প্রমাণাদি নিয়েছে। ফলে ১০ মাস পরে এসে তদন্ত হয়নি বলার সুযোগ নেই।
ভিকটিমের অভিযোগপত্র অনুযায়ী জানা যায়, ঘটনার পরও অভিযুক্ত বারবার ভিকটিমকে ফোন করে এবং ক্ষুদে বার্তা দিয়ে উত্ত্যক্ত করেন। এ সংক্রান্ত প্রমাণাদিও নিরোধ কমিটিকে দেওয়া হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানির নীতিমালার ৩ (গ) ধারা অনুযায়ী, কাউকে মোবাইল ফোন, ইমেইল বা ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে উত্যক্ত করলে সেটি বিচারের আওতায় পড়ে। এ ধারা অনুযায়ীও উক্ত ঘটনাটি তদন্ত ও বিচারের আওতায় পড়ে।
দেশের পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম বিষয়ক শিক্ষকদের প্ল্যাটফর্ম মিডিয়া এডুকেটরস নেটওয়ার্কের দাবি, অভিযোগকারী শিক্ষকের অভিযোগটি অবিলম্বে আমলে নিয়ে তদন্ত করতে হবে। তদন্তের মাধ্যমে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তকে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। অভিযোগটি মিথ্যা হলে সেটিও তদন্ত করে খোলাসা করা হোক। তাতে অভিযুক্তেরও অধিকার নিশ্চিত হবে। আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে যৌন হয়রানির ঘটনার তদন্ত না হলে এই ধরনের অপকর্ম উৎসাহিত হবে।
পরিশেষে আমরা বলতে চাই, ‘উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ নীতিমালা-২০০৮’ এর ১.৩ ধারা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজস্ব প্রবিধি প্রণয়ন করে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার যথাযথ পরিবেশ নিশ্চিত করুক।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী শিক্ষকবৃন্দ (পদ অনুসারে, জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নয়)
১. অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরিন, অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
২. অধ্যাপক ড. কাবেরী গায়েন, অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
৩. ফাহমিদুল হক, ভিজিটিং অধ্যাপক, সেন্টার ফর এক্সপেরিমেন্টাল হিউম্যানিটিজ, বার্ড কলেজ, যুক্তরাষ্ট্র (সাবেক অধ্যাপক, ঢাবি)
৪. শাওন্তী হায়দার, সহযোগী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
৫. ড. নজরুল ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর
৬. মোহাম্মদ খোরশেদ আলম, সহযোগী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
৭. কাজী মামুন হায়দার, সহযোগী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
৮. মোঃ শহীদুল হক, সহযোগী অধ্যাপক, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
৯. ড. অলিউর রহমান, সহযোগী অধ্যাপক, জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া কম্যুনিকেশন, গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ
১০. শাহাব উদ্দিন, সহযোগী অধ্যাপক, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
১১. শাহ নিস্তার কবির, সহযোগী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
১২. ড. মো. মোজাম্মেল হোসেন বকুল, সহযোগী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
১৩. শাতিল সিরাজ, সহযোগী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
১৪. মাধব দ্বীপ, সহকারী অধ্যাপক, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
১৫. মাহবুবুল হক ভূঁইয়া, সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
১৬. শেখ আদনান ফাহাদ, সহকারী অধ্যাপক, জার্নালিজম ও মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
১৭. মো. বেলাল হুসাইন, সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
১৮. কাজী এম. আনিছুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
১৯. মনিরা শারমিন, সহকারী অধ্যাপক, জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া কম্যুনিকেশন, গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ
২০. মাহমুদুল হাসান, সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
২১. নাসরিন আক্তার, সহকারী অধ্যাপক, জার্নালিজম, কমিউনিকেশন এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ
২২. মো. রাইসুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
২৩. সাফায়াত হোসেন, সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
২৪. মনিরা বেগম, সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়
২৫. সুমাইয়া শিফাত, সহকারী অধ্যাপক, জার্নালিজম ও মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
২৬. অর্ণব বিশ্বাস, সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
২৭. আলি আহসান, সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
২৮. মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, সহকারী অধ্যাপক, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
২৯. ইমরান হোসেন, সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়
৩০. ইব্রাহীম বিন হারুন, সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
৩১. মাহামুদুল হক, প্রভাষক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর
৩২. নন্দিতা তাবাসসুম, সিনিয়র লেকচারার, মিডিয়া স্টাডিজ এন্ড জার্নালিজম, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস
৩৩. দিলশাদ হোসেন, দোদুল, সিনিয়র লেকচারার, মিডিয়া স্টাডিজ এন্ড জার্নালিজম, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস
৩৪. জেনিনা ইসলাম আবীর, সিনিয়র লেকচারার, মিডিয়া এন্ড কমিউনিকেশন, ইনডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ
৩৫. মোহাম্মদ রাশেদুল হাসান, জ্যেষ্ঠ প্রভাষক, সাংবাদিকতা, গণমাধ্যম ও যোগাযোগ বিভাগ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
৩৬. শেহরিন ফারহানা মনি, সিনিয়র লেকচারার, সিনিয়র লেকচারার, মিডিয়া স্টাডিজ এন্ড জার্নালিজম, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস
৩৭. আফতাব হোসেন, জ্যেষ্ঠ প্রভাষক, সাংবাদিকতা, মিডিয়া ও যোগাযোগ বিভাগ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
৩৮. মেহেদী হাসান রাজীব, প্রভাষক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বিইউপি
৩৯. রাগীব রহমান, প্রভাষক, ফিল্ম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়
৪০. নওশীন জাহান ইতি, প্রভাষক, জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
৪১. সারোয়ার আহমাদ, প্রভাষক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর
৪২. জাকিয়া জাহান মুক্তা, প্রভাষক, জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া কম্যুনিকেশন, গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ
৪৩. সঞ্জয় বসাক পার্থ, প্রভাষক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বিইউপি
৪৪. নাদিয়া রহমান, প্রভাষক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বিইউপি
৪৫. ফরহাদ উদ্দিন, প্রভাষক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়
৪৬. রিফাত সুলতানা, প্রভাষক, জার্নালিজম, কমিউনিকেশন এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ
৪৭. মো. আব্দুল করিম, প্রভাষক, ফিল্ম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়
৪৮. তপন মাহমুদ, সংযুক্ত শিক্ষক, সাংবাদিকতা বিভাগ, স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ
৪৯. এনায়েতুর রহমান, প্রভাষক, সাংবাদিকতা, মিডিয়া ও যোগাযোগ বিভাগ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
৫০. মো. রমজান আলী, প্রভাষক, জার্নালিজম, কম্যুনিকেশন এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়
৫১. প্রিয়াংকা কুন্ডু, প্রভাষক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস।