বুলবুল আহমেদ, নবীগঞ্জ থেকেঃ হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে একের পর এক ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগের শেষ নেই। এ যে মগের মুল্লুক হয়ে গেছে। এসব দেখার যেন কেউ নেই! অনেকেই বিজ্ঞ আদালত ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। আবার কেউ কেউ মিথ্যা মামলা ভয়ে নিরবে ধর্য্য ধরে আল্লাহর উপর ছেড়ে দিয়েছে।
অভিযোগের ভিত্তিতে জানাযায়, নবীগঞ্জ উপজেলার ৪নং দীঘলবাক ইউনিয়নের ফাদুল্লা গ্রামের হত দরিদ্র ছাত্তার মিয়া (৬০) এর বসতভিটা তার পার্শ্ববর্তী প্রভাবশালী আনোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী ফাহিমা বেগমের নামে ভুমিহীন বন্দবস্থ আনেন। তখন কার ইনাতগঞ্জ তফসিল অফিসের তফসিলদার মহসিন আলী ও সার্ভেয়ার আমিনুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে অভিযোগের খবর পাওয়া গেছে। তারা ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে একজন দিন মজুরের বসতভিটা এক প্রভাবশালীকে ভূমিহীন বন্দবস্থ দেওয়ায় ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগ এনে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নবীগঞ্জ উপজেলার ৪নং দীঘলবাক ইউনিয়নের ফাদুল্লা গ্রামের হত দরিদ্র ছাত্তার মিয়া। অভিযোগের প্রেক্ষিতে আরো জানাযায়, ছাত্তার মিয়া তাহার পিতৃকাল অর্থাৎ ৪০/৫০ বছর যাবৎ সরকারি খাষ জমিতে একটি ঘর বানিয়ে ৮ সদ্যসের পরিবার নিয়ে তিনি এই বাড়িতে তিনি বসবাস করে আসছেন। সরকারি খাষ জমি হওয়াতে ২০১৪ সালে তিনি ঐ জায়গা ভূমিহীন বন্দবস্থ পাওয়ার জন্য চেয়ারম্যান ও মেম্বার কর্তৃক প্রকৃত ভূমিহীন সনদ সহ জেলা প্রশাসক বরাবর একটি আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দায়িত্ব পান তখনকার সার্ভেয়ার আমিনুল ইসলাম ও তফসিলদার মহসিন আলী। শুুরু থেকেই সার্ভেয়ার আমিনুল ইসলাম ও তফসিলদার মহসিন আলী হতদরিদ্র ছাত্তার মিয়াকে বিভিন্ন ভাবে দীর্ঘদিন অফিসে আসা যাওয়া করিয়ে হয়রানি করেন। পরে এমন হয়রানির কারণ জানতে চাইলে আমিনুল ইসলাম ২ লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করেন! এতে হতদরিদ্র ছাত্তার মিয়ার পক্ষে এতো টাকা দেওয়া সম্ভব না হওয়াতে সার্ভেয়ার আমিনুল ইসলাম ও তফসিলদার মহসিন আলী মিলে ছাত্তার মিয়ার পার্শ্ববর্তী কোটিপতি প্রভাবশালী আনোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী ফাহিমা বেগমের নামে ২লক্ষ ৫০ হাজার টাকার ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে ভুমিহীন বন্দবস্থ দিয়ে দেন।
এ দিকে, প্রভাবশালী আনোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী ফাহিমা বেগম ভূমিহীন বন্দবস্থ পাওয়ার পর থেকে ছাত্তার মিয়ার বসতভিটা দখলের হুমকি প্রদান করতে থাকেন। এ খবরে ছাত্তার মিয়া নবীগঞ্জ ভূমি অফিসে গিয়ে সার্ভেয়ার আমিনুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন- আমার কিছু করার নেই বলে অফিস থেকে তাড়িয়ে দিতে চাইলে ছাত্তার মিয়া উত্তেজিত হয়ে পরেন। এক পর্যায়ে সার্ভেয়ার আমিনুল ইসলাম তার নিজস্ব মোবাইল ফোন থেকে তফসিলদার মহসিন আলীকে ফোন করে বলেন, আপনি, আমি ও জিতেন্দ্র স্যার মিলে যে আড়াই লক্ষ টাকা ঘুষ খেয়ে ফাদুল্লায় একটা ভূমিহীন বন্দবস্থ দিয়েছিলাম এখন ঐ লোক অফিসে এসে উত্তেজিত হয়ে আমাকে নানান কথাবার্তা বলতেছে, আমি এখন কি করব? এ সময় সু- কৌশলে তফসিলদার মহসিন আলীর সাথে আলাপচারীতা ছাত্তার মিয়া তার অন্য একটি মোবাইলে রেকর্ড করেন।
এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইন আনুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী ভূমিকে নির্দেশ প্রদান করেছেন হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক। এ ঘটনার তীব্র নিন্দার ঝড় বইছে।