এম এ কাদের, সরজমিন প্রতিবেদকঃ হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার ১০নং ছাতিয়াইন ইউপির “ছাতিয়াইন বিশ্বনাথ হাই স্কুল এন্ড কলেজে দুর্নীতির মহা উৎসবের অভিযোগ উঠেছে” ।
রবিবার (২৮ এপ্রিল) সকালে ছাতিয়াইন বিশ্বনাথ হাই স্কুল এন্ড কলেজের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর জানতে সরজমিনে অনুসন্ধানে গেলে ওই স্কুল এন্ড কলেজের দুর্নীতি ও অনিয়ম বেরিয়ে আসে। অনুসন্ধানে জানা যায়, ঐ স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক হারুনুর রশিদ ও সহকারী শিক্ষক দীপক কান্তি রায় সকল অপকর্মে প্রধান সহযোগী হিসেবে রয়েছে। স্হানীয় অসংখ্য ব্যক্তিগন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দ্বীপক মাষ্টার যে দিন থেকে এই স্কুলে যোগদান করেছেন, তার পর থেকে আস্তে আস্তে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাত্রা বেড়েই চলেছে। আর প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ তার সাথে হাতে হাত মিলেয়ে চালিয়ে যাচ্ছে মনগড়া নিয়ম নীতি।
অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে দ্বীপক কান্তি রায় এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি যত কিছু করেছি সবকিছুই প্রধান শিক্ষক জানেন। আমি স্কুলের অধিকাংশ কাজই করে থাকি। প্রায় সব কাজই আমার মাধ্যমে হয়। কিন্তুক কোন কাজের বিষয়ে আমি কোন কিছু বলতে পারব না। যা কিছু জিজ্ঞেসা করার প্রধান শিক্ষকে জিজ্ঞেসা করুন। এই বলে তিনি মোবাইল ফোনের আলাপ শেষ করে দেন। আর অন্যদিকে প্রধান শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আপনার দেওয়া সংবাদ প্রকাশের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাদের ডেকে নিয়ে বলেছেন বিষয় গুলো তদন্ত করা হবে। এবং শিক্ষা অফিসার’কে দায়িত্ব দিয়েছেন তদন্ত করার জন্য। এ সাথে বলেছেন কোন সাংবাদিকে কোন তথ্য না দেওয়ার জন্য। তাই কোন কিছু বলা যাবে না।
প্রধান শিক্ষকের কথার ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে সরাসরি দেখা করে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এমন কোন কথা বলিনি। আমি বলে দিয়েছি আপনার স্কুল আপনাদের বিরুদ্ধে অনেক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, বিষয় গুলো তদন্ত করা হবে এবং তদন্তের জন্য শিক্ষা অফিসার’কে দায়িত্ব দিয়েছি।
স্কুলের উন্নয়ন, মসজিদ নির্মাণ, ছাত্র ছাত্রীদের রেজিষ্ট্রেশন, কোচিং বাণিজ্য, স্কুল মাঠে গরুর হাট বসিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া, শিক্ষক নিয়োগ বানিজ্য, স্কুল ফান্ড থেকে টাকা ধার নিয়ে আত্মসাৎ, স্কুল ফান্ড থেকে প্রধান শিক্ষক দেড় লক্ষ টাকা ধার নিয়ে আত্মসাৎ, মালামাল ক্রয় করার ক্ষেত্র ব্লাংক বিল ভাউচার আনা, বিল ভাউচারে অতিরিক্ত টাকা, অনিয়ম ও অপরাধের বিষয়ে কোন শিক্ষক প্রতিবাদ করলে ঐ শিক্ষক কে কৌশলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেওয়া, শতবর্ষ ফান্ড বানিজ্য, টিফিন বানিজ্য, ফান্ড থেকে টাকা নিয়ে নিজের জন্য মোবাইল ক্রয়সহ দুর্নীতি ও অনিয়মের পাহাড় জমে উঠেছে। বিষয় গুলো নিয়ে সদ্য মেয়াদ অতিবাহিত হওয়া কমিটির সভাপতি মোঃ শামসু মিয়া বলেন, যদি কোন শিক্ষক বা কমিটির লোক কোন প্রকার অসংগতি করে থাকে, তাহলে অবশ্য তার জবাবদিহি করতে হবে। আইন সবার জন্য সমান। কোন ব্যক্তিই আইনের উর্ধে নয়। এছাড়া শিক্ষা অফিসার খুব শীঘ্রই তদন্তে আসতেছে সব কিছু উম্মোচন হবে। কে দুর্নীতি করেছে আর কে অনিয়ম করেছে৷ আমিও যদি কোন অনিয়ম বা দুর্নীতি করে থাকি তারও বিচার আমি দিতে প্রস্তুত আছি।
নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি রয়েছে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক দ্বীপক কান্তি রায়সহ আরো অনেকের বিরুদ্ধে। তাদের বিরুদ্ধে কোন শিক্ষক বা কোন ব্যক্তি মুখ খুলতে সাহস পায়না হয়রানি শিকার হবে বলেও অনুসন্ধানে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসে।
প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ ঐ স্কুলে যোগদান করেন ২০শে অক্টোবর ২০১০ইং তারিখে। যোগদানের পর থেকে অদ্যবদি তিনি প্রায় এক কোটি টাকার কাজ করিয়েছেন বলে নিজ কন্ঠে স্বীকার করেন। কিন্তুক প্রতিটি কাজের মধ্যেই রয়েছে দুর্নীতির মহা উৎসব। তার প্রধান সহযোগী হিসেবে সাথে রয়েছেন সহকারী শিক্ষক দ্বীপক কান্তি রায়।