নাসির নগর প্রতিনিধিঃ পীরে কামেল মাওলানা মোস্তাক আহমদ কাদেরী ওরফে মোস্তাক হুজুরের কাছে গত ২৮ মার্চ ২০২২ ইং রোজ সোমবার ব্রাহ্মণ্যবাড়িয়ার নাসিরনগর কলেজ মোড়ের পাশ্ববর্তী হুজুরের আস্তানায়। মেয়ের ঘরের ৯ বছর বয়সী নাতি ফাহিম কে নিয়ে চিকিৎসা নিতে যায় লাখাই উপজেলার ঝিরুন্ডা গ্রামের মোছা. রেহেনা বেগম(৪০)।
রেহেনা বেগম জানায় – তিনি ঐ পীরের ভক্ত বা মুরিদ নয়।লোকমুখে শুনেছেন হুজুরের তাবিজ পরা , ঝাড় -ফুক, পানি পরা, তেল পরা, ডাবের পানি পরা ইত্যাদিতে রোগীরা সুস্থ্য হয়।তাই হুজুরের কাছে তিনি লেখাপড়ায় অমনোযোগী ও চঞ্চল প্রকৃতির নাতি ফাহিম কে চিকিৎসা করার জন্য সেখানে নিয়ে যান।
সকাল ৭ টা হতে দুপুর ৩ টা পর্যন্ত সেখানে অপেক্ষা করেও হুজুরের দর্শন পাচ্ছেন না।
এদিকে নাতিকে নিয়ে যেতে মেয়ের জামাই তাগাদা দেয়।মেয়ে জামাই এর বাড়ি গোয়ালনগরের মাছমা গ্রামে,ওরা দূরবর্তী গ্রামের বিধায় নৌকা বা ট্রলার না পেলে বাড়ি যেতে অসুবিধা হতে পারে।
তাই রেহেনা সিরিয়াল ভেঙ্গে হুজুরের নিকট গিয়ে তার রোগীকে আগে দেখার জন্য হুজুরের কাছে অার্জি করেন। এতে হুজুর বসা থেকে উঠে রেহানার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে চড়াও হোন এবং উপস্থিত সকলের সামনে খবিস/খানকি ইত্যাদি অশ্লীল শব্দ প্রয়োগ করে গালাগালি করতে থাকেন। এক পর্যায়ে হুজুর কে থামতে বললে তিনি আরো বেশী উত্তেজিত হয়ে জালি বেত দ্বারা রেহানার উপর হিংস্র ভাবে এলোপাথাড়ি বেত্রাঘাত করতে থাকে। তাতে রেহানা বেগমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্ত জমাট,জখম ও ফুলা সৃষ্টি হয়।
রেহানা বেগম জানায় যখন যন্ত্রনায় কাতরাতে থাকে তখন হুজুরের আস্তানার সহায়ক ও ভক্তবৃন্দরা বলতে থাকে – আলহামদুলিল্লাহ,এটা কুছতা না। হুজুর মারলে ছোয়াব হয়।
বেত্রাঘাতে আহত নারী একসময় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে নাসিরনগর উপজেলা সাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থ্য হয়ে নাসিরনগর কুন্ডা গ্রামে বোনের বাড়িতে রাত্রি যাপন করেন।
পরদিন ২৯ মার্চ ২০২২ ইং মঙ্গলবার সুবিচার প্রার্থনা করে নাসিরনগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
এই ব্যাপারে অভিযুক্ত পীর মাওলানা মোস্তাক আহমদ আল কাদরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন এটা আমার বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ষড়যন্ত্রের একটা অংশ। ঐ নারীকে অামি চিনিনা। একটা স্বার্থান্বেষী মহল আমার জনপ্রিয়তা ও সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ঘটনা সাজিয়েছে।