এফআইআর টিভি অনলাইন ডেস্কঃ বাংলাদেশ পুলিশে সুনামের সাথে কাজ করে আসছেন এমন এক কর্মকর্তা, চলনবিলের সাথে যার প্রাণের দোস্তি তার মনটাও সেই চলন বিলের মতোই বিশাল। সদ্য পদোন্নতি প্রাপ্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হকের কথা বলছি। উত্তরবঙ্গের অনেক মানুষের মুখে যার গল্প প্রতিনিয়ত। আজও বগুড়াবাসী যে কোন সমস্যা-সম্ভবনায় তার দিক নির্দেশনার জন্য একবার হলেও স্মরণ করে।
রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের শীর্ষ জঙ্গি নেতাসহ মোট ৩৩ জন দুর্ধর্ষ জঙ্গি গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশে পুলিশ সর্বোচ্চ পদক বিপিএম (সাহসিকতা ) পেয়েছিলেন পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি ও র্যাব-১৩ এবং বর্তমানে র্যাব-৪ এর অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন পাবনার চাটমোহরের কৃতি সন্তান মো. মোজাম্মেল হক।
মোঃ মোজ্জাম্মেল হক এর এফবিঃ আইডিতে প্রকাশিত পোস্ট যা হুবহু নিম্নে তুলে ধরা হল।
ইসলামের প্রাথমিক যুগে নেশা করা হারাম ছিল না। তবে তা ক্রমান্বয়ে অবৈধ ঘোষণা করা হয়। প্রথমত মদকে একটি নেয়ামত ও আকর্ষণীয় পানীয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, ‘আর খেজুর ও আঙুর গাছের ফল থেকে তোমরা গ্রহন করো নির্যাস(খামর)এবং ভাল খাদ্য। নিশ্চয় এতে বুদ্ধিমানদের জন্য মহান উপদেশ রয়েছে’ -(সুরা আন নহল: ৬৭)। পরবর্তীতে বিভিন্ন ধারাবাহিকতায় মদ বা নেশাকে হারাম করে দেওয়া হয়েছে। প্রথমে আল্লাহ পাক ঘোষণা করেন, ‘তারা আপনাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। হে নবী! আপনি বলে দিন, এতদুভয়ের মাঝে রয়েছে মহাপাপ। আর মানুষের জন্য উপকারিতাও রয়েছে। তবে এগুলোর পাপ উপকারিতা অপেক্ষা অনেক বড়’ -(সুরা আল বাক্বারা: ২১৯)। এর পরবর্তীতে অবতীর্ণ হয় ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা মাতাল অবস্থায় নামাজের নিকটবর্তী হয়ো না। যতক্ষণ না তোমরা বুঝতে সক্ষম হও যা তোমরা বলছ’-(সুরা আন নিসা: ৪৩)। পরিশেষে মদ হারামের অমোঘ ঘোষণা নিয়ে নাজিল হয় ‘হে ঈমানদারগণ! নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, স্থাপনকৃত মূর্তি ও ভাগ্য নির্ধারক তীর অপবিত্র ও শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা ইহা হতে দূরে থাক। যেন তোমরা সফলকাম হতে পার’ -(সুরা আল মায়িদা: ৯০)। এভাবেই মহান রাব্বুল আলামিন মদ বা নেশা জাতীয় জিনিসগুলোকে হারাম ঘোষণা করেন।
হাদিস শরিফে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাণী, ‘তুমি মদ্যপান করবে না। কেননা, ইহা সব মন্দের চাবিকাঠি’ -(ইবনে মাজাহ)। অন্য হাদিসে বলা হয়েছে, ‘হজরত মু’আজ ইবনে জাবাল (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে দশটি বিষয়ে উপদেশ দান করেছেন, (তন্মধ্যে একটি হলো) কখনো শরাব তথা মদ পান করবে না। কেননা, তা সকল প্রকার অশ্লীল কর্মের উৎস’ -(আহমদ)। প্রত্যেক নেশা আনয়নকারী বস্তু মদের অন্তর্ভুক্ত। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘হজরত ইবনে উমর (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, প্রত্যেক নেশা আনয়নকারী বস্তু মদের শামিল এবং প্রত্যেক নেশা আনয়নকারী বস্তু হারাম। যে ব্যক্তি দুনিয়ায় মদ পান করবে, অতঃপর তওবা না করে মদ্যপানের অভ্যাস নিয়ে মৃত্যুবরণ করবে, সে পরকালে (জান্নাতের) মদ পান করতে পারবে না’ -(মুসলিম)। মদ হচ্ছে সকল গুনাহের মূল।
শুধু মদ্যপানকারী নয়, মদ প্রস্তুতকারী, বহনকারী, বিক্রিকারীসহ অনেকের উপর অভিসম্পাত করা হয়েছে। হাদিসের ভাষ্যানুযায়ী ‘হজরত আনাস (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদের ক্ষেত্রে দশ ব্যক্তিকে অভিসম্পাত করেছেন। এক. মদ প্রস্তুতকারী, দুই. যার নিমিত্তে মদ তৈরি করা হয়, তিন. মদ পানকারী, চার. মদ বহনকারী, পাঁচ. যার নিকট মদ বহন করে নেওয়া হয়, ছয়. মদ পরিবেশনকারী, সাত. মদ বিক্রেতা, আট. মদের মূল্য ভোগকারী ব্যক্তি, নয়. মদ তৈরি করার আসবাব ক্রয়কারী ব্যক্তি, দশ. মদের নিমিত্তে যা ক্রয় করা হয়’ -(তিরমিজি, ইবনে মাজাহ)। এ থেকে পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে যে, মদ্যপান বা নেশা করা ব্যক্তি বা দল, সমাজ, দেশ ও জাতির জন্য অমঙ্গল, অকল্যাণকর।
আসুন ইসলামে হারাম, স্বাস্থ্যের জন্য মারত্মক ক্ষতিকর এবং সমাজের জন্য অত্যন্ত অকল্যাণকর মাদক ব্যাবসায়ীদের দমন ও প্রতিরোধে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনিকে সহায়তা করি এবং মাদক মুক্ত দেশ ও জাতি গঠন করি।