মোযযাম্মিল হক মাছুমি, নাসির নগর ( ব্রাহ্মণবাড়ীয়া) থেকেঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করেছে ঐতিহ্যবাহী ফান্দাউক দরবার শরীফের পীর আলহাজ্ব মাওলানা মুফতি সৈয়দ সালেহ আহমদ মামুন আল-হোসাইনী। সোমবার ৪ই জুলাই দরবার শরীফের মাদরাসা ময়দানে ৪০০ পরিবারের মধ্যে এই ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে ১৫০টি হিন্দু পরিবারকে ত্রাণ সামগ্রী এবং ২৫০ টি মুসলিম পরিবারকে ঈদুল আযহা উপলক্ষে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে ছিলো ময়দা, আলু, পিঁয়াজ তেল, চিনি সেমাই এবং লবন। ত্রাণ বিতরণের সময়ে উপস্থিত ছিলেন ফান্দাউক দরবার শরীফের পীরজাদা মুফতি সৈয়দ মঈনুদ্দিন আহমদ, পীরজাদা সৈয়দ বাহাউদ্দীন খোকন। অন্যানদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ফান্দাউক পন্ডিতরাম উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমেদ শিবলী, অভিভাবক সদস্য জানে আলম সায়েম ভূইয়া, ফান্দাউক ইউনিয়নের নির্বাচিত সদস্য ফরহাদ মিয়া, আলমগীর শাহ, বিএনপি নেতা জহিরুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা লতিফ হোসেন, ফান্দাউক পাগল সংকর আখরার ঠাকুর সূখদা বলরাম, ইসকন মন্দিরের ঠাকুর গৌরাঙ্গ রায় সাংবাদিক আক্তার হোসেন প্রমুখ।
ত্রাণ বিতরণের পূর্বে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ফান্দাউক দরবারের পীর মুফতি সৈয়দ সালেহ আহমদ মামুন আল-হোসাইনী বলেন, সিলেট, সুনামগঞ্জসহ বন্যা কবলিত মানুষের পাশে আমাদের সাধ্যমতো ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছি। পরবর্তীতে নাসিরনগরে বন্যার অবনতি হওয়ায় দরবার শরীফের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ আঞ্জুমানে ইসলামি ছাত্র মহলের সভাপতি পীরজাদা মাওলানা সৈয়দ আবুবকর সিদ্দিক আল-হোসাইনীর নেতৃত্ব ২০ দিন যাবৎ কয়েকটি ধাপে উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়ণ কেন্দ্রে ঘুরে ঘুরে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে এবং বন্যার পানি না যাওয়া পর্যন্ত তা চলমান থাকবে।
এ সময় পীর সাহেব আরো বলেন, আপনারা দেখেছেন সিলেট ও সুনামগঞ্জে যখন ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে সবার আগে বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এদেশের আলেমসমাজ। অথচ কিছু আলেম বিদ্বেষী এই আলেমদের বিরুদ্ধেই শ্বেতপত্র তৈরি করে তাদেরকে দুর্নীতির তকমা লাগিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছিল। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুজন ঠাকুর তাদের বক্তব্যে বলেন বরাবরই ফান্দাউক দরবার শরীফ মানবতার কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে যা আজকের এই অনুষ্ঠান থেকে আমাদের শিক্ষা দেয়। এখানে সনাতন ধর্মাবলম্বী এবং মুসলমানদের মধ্যে যে একটা সম্প্রীতির বন্ধন অটুট আছে তা আবারও প্রমাণিত হয়েছে। আমরা এভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে বজায় রেখে দেশকে এগিয়ে নিতে চাই।