আকিকুর রহমান রুমন, বিশেষ প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে একটি হাঁসের খামারে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে পাঁচ বছরের একটি শিশু মৃত্যু বরন করেছে ।
নিহত শিশুটি হলো হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলা সদরের ৩নং দক্ষিণ পূর্ব ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের কালিদাস টেকা(মোহাম্মদপুর দক্ষিণ)এর মোঃ নিদু মিয়ার পুত্র রাসেল মিয়া(০৫)।
এলাকাবাসী সূত্রে জানাযায়,
৩রা সেপ্টেম্বর(রবিবার)আনুমানিক সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে নিহত শিশুর পাশের বাড়ির একটি হাঁসের খামারে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে এই বাচ্চার মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানা যায়।
একই ঠিকানার পাশের বাড়ির মোতাব্বির মিয়া ও তার পুত্র সুমন মিয়া তাদের হাঁসের খামারের আশপাশে বিদ্যুৎতিক তার দিয়ে চারপাশ ঘিরে রেখেছেন। অন্যান্য জীব,জন্তুু সাপ,শেয়াল, চিতাবাঘ এর হাত থেকে তার খামারের হাসঁ রক্ষার জন্য।
আর এদিকে সকালে শিশু বাচ্চা রাসেল খামারের পাশ দিয়ে গেলে বিদ্যুতিক তারের সাথে জড়িয়ে পড়ে এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়। এমনটাই জানান আশপাশের বাড়ি ঘরের অবস্থানকারী লোকজন।
রাসেলের এই ঘটনাটি আচ করতে পেরে খামার মালিক ও তার পরিবারের লোকজন এখান থেকে উদ্ধার করে বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার জন্য রওয়ানা দেন বলেও জানা যায়।
কিন্তু তারা হাসপাতালে না গিয়ে রাস্তা থেকে আবার চলে আসেন এবং ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়ে রাখার চেষ্টা করেন।
অন্যদিকে এই ঘটনাটি বানিয়াচং থানা পুলিশ অবগত হলে,থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন এর নির্দেশে এসআই মনজুরুল ইসলাম একদল পুলিশ নিয়ে সকাল সাড়ে দশটার দিকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার খবর পাওয়া যায়।
তবে এই বিষয়টাকে এলাকাবাসীর কিছু সংখ্যক লোকজন সামাজিক ভাবে মিমাংসা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং উপস্থিত থানা পুলিশকে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলেও সেখানের উপস্থিত কিছু সংখ্যক লোকজনের কাছ থেকে জানাযায়।
তবে উপস্থিত পুলিশের বক্তব্য হলো,এটা আইনী বিষয় এবং এটাকে আইনি ভাবেই দেখতে হবে বলেও জানান তারা।
পুলিশ উপস্থিত লোকজনের সামনেই এমনটাই বলছিলেন।
এব্যাপারে নিহত শিশু রাসেলের পরিবারের লোকজনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাদের কাছ থেকে জানাযায়,তাদের শিশু রাসেল পাশের বাড়িতে খেলা করতে গিয়ে হাঁসের খামারের সাথে বিদ্যুৎতের তার দিয়ে লাইন দেওয়া ছিলো এই টিনের মধ্যে লেগে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে।
তখনও তারা তাদের বাচ্চাটিকে বাঁচাতে গিয়ে শিশু রাসেলকে মা ও নানী ছাড়াতে গিয়ে আহত হন।
এমনকি রাসেলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিতে চাইলেও খামার মালিক পুত্র সুমনের চাপে রাস্তা থেকে ফিরে আসেন এবং তার চাপের কারণে ঐ তারা তড়িঘড়ি করে কাউকে না জানিয়ে দাফন করতে চাইছিলেন বলেও জানান তারা।
সর্বশেষ তাদের বাচ্চার রাসেলের মৃত্যুর বিষয়ে কোন অভিযোগ দায়ের করবেন কিনা জানার চেষ্টা করলে,বাচ্চাকে দাফন কাজে ব্যস্ততা থাকার কারনে তাদের কাছ থেকে কোন বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এব্যাপারে খামার মালিক মুতাব্বির মিয়া ও তার পুত্র সুমনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাদের কোন সাড়া পাওয়া যায়নি বলে কোন প্রকার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এব্যাপারে ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নুরুল হুদার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,এই বিষয়টি নিয়ে ঐ সারাদিন ব্যস্ত ছিলেন এবং বর্তমানেও বাচ্চাটির দাফন কাজের জন্য একটু সহযোগীতা করে যাচ্ছেন।
তবে আগামীকাল এই বিষয়টি সামাজিক ভাবে শেষ করার জন্য চেষ্টা করা হবে বলেন।
এব্যাপারে ৩নং দক্ষিণ পূর্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আরফান উদ্দিন এর সাথে রাত ৮টা ৫৯মিনিটে যোগাযোগ করা হলে তিনিও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,শিশু বাচ্চার লাশের ময়না তদন্তের কাজ শেষ করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।এখন লাশ দাফন করা হবে।
এবং আগামীকাল এই বিষয়টি উভয় পক্ষকে নিয়ে থানা পুলিশকে অবগত করে সামাজিক ভাবে মিমাংসা করার জন্য চেষ্টা করবেন বলে জানান তিনি।
এব্যাপারে ঘটনাস্থলে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মনজুরুল ইসলাম এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার কোন সাড়া না পাওয়ায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এব্যাপারে বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি শিশু বাচ্চার মৃত্যুর বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,এমন সংবাদ পাওয়ার পর পরই তিনি পুলিশ পাঠিয়ে লাশ উদ্ধার ময়না তদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে প্রেরন করেছেন।
তবে শিশুর পরিবার থেকে একন পর্যন্ত কোন অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। যদি অভিযোগ দায়ের করা হয় তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনী ব্যবস্হা গ্রহন করা হবে বলেন তিনি।