বিচারের দাবিতে ৬ মানবধিকার সংগঠনের যৌথ সংবাদ সম্মেলন

0
91

বিশেষ প্রতিনিধিঃ চট্টগ্রামে শিশু রুনাকে পাশবিক নির্যাতনের পর পুড়িয়ে মারার ঘটনার পুনঃ তদন্ত ও আসামিকে গ্রেফতারের দাবিতে ছয়টি মানবধিকার সংগঠনের যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে ছয়টি মানবাধিকার সংগঠন এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করে উক্ত দাবি ব্যক্ত করে।

২০১৪ সালে পাশবিক নির্যাতনের পর পুড়িয়ে কেরোসিন ঢেলে শিশু রুনা হত্যাকান্ডের সঠিক বিচার ও মামলার বাদীর সন্ধান ও মামলার পুনঃতদন্তের দাবিতে দাবি ব্যক্ত করে।

জানা যায়,গত ২০১৪ সালের ২৯ নভেম্বর,নগরীর ১৩ নং আইস ফ্যাক্টরির টি এম টাওয়ার ৪র্থ তলায় আমিন আহমেদ রোকনের ফ্ল্যাটে গৃহকর্মীর কাজ করতো শিশু রুনা(১৪)কে গৃহকর্তা রোকন তার উপর নানা ভাবে বিভিন্ন সময় পাশবিক নির্যাতন চালায়।

আরো জানা যায়,ভুক্তভোগী রুনার মা গত ২৯ নভেম্বর ২০১৪ মেয়েকে দেখতে আসলে মেয়ে রুনা তার উপর চলা গৃহকর্তা রোকনের অন্যায় আচরণের কথা জানালে আসামি রোকন ক্ষিপ্ত হয়ে রুনাকে লাথি মারে, মায়ের সামনে মেয়েকে নির্যাতনের পর রান্না ঘরে নিয়ে গিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিলে রুনার শরীরের অধিকাংশই পুড়ে যায়। পরে চট্টগ্রাম মেডিক্যালে দুই দিন চিকিৎসার পর সে মারা যায়। রুনার মা রোকেয়া বেগম বাদী হয়ে সদরঘাট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।যার মামলা নং ২৬(১১)২০১৪।

সুত্রে আরো জানা যায়, একমাত্র আসামী চন্দনাইশের আবদুল জব্বারের ছেলে আমিন উদ্দিন আহমেদ রোকন,বর্তমান চন্দনাইশের জোয়ারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। নিজেকে স্থানীয় এম পি’র ভাগিনা পরিচয় দিয়ে সে অবৈধ ইটভাটা, জমি দখল, পাহাড় কাঠার মতো অপরাধ অবাধে করে যাচ্ছে।

তৎকালীন জাতীয় পত্রপত্রিকায় রুনা হত্যাকাণ্ড ঘটনা অন্যতম প্রধান সংবাদ হিসেবে প্রচার পেলেও ধুর্ত লম্পট রোকন গাঢাকা দেয় ফলে তাকে গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়েও গ্রেপ্তার করেনি আইনশৃংখলা বাহিনী । মিডিয়ার ফলোআপ নিউজেও সদরঘাট থানা পুলিশ গ্রেপ্তারে নিজেদের অপারগতার কথা স্বীকার করে বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন এ।

উপস্থিত মানবাধিকার নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, একটি হত্যা মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় না এনে বাদীকে গুম করে মিথ্যা বাদী সাজিয়ে মামলা তুলে নেয়া হয়। একটি অসহায় শিশু’র নির্মম হত্যাকান্ড এভাবে ধামাচাপা দিলে ন্যায় বিচার নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। নারী ও শিশু নির্যাতনের ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী কোন পরিকল্পিত হত্যা মামলা প্রত্যাহার করা যায়না। এমনকি এই মামলায় ঘটনার কোন সাক্ষীকে আদালতে আনা হয়নি।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে, নেতৃবৃন্দ মামলার ডকেটের কপি উপস্থাপন করে পুলিশি তদন্তের বিভিন্ন আইনগত অসংগতি তুলে ধরেন।
এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আইন শৃংখলা বাহিনীর প্রতি যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।
বক্তারা, উপস্থিত সাংবাদিকদের আন্তরিক সহায়তা কামনা করেন। সাংবাদিক সম্মেলনে ছয়টি মানবিকার সংস্থার পক্ষ থেকে সেলিম হোসেন চৌধুরী, মো: রফিকুল ইসলাম, মনসুর উল আলম প্রমুখ সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। মানবাধিকার বাস্তবায়ন কমিশন, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন, বাংলাদেশ আইন ও শালিস কেন্দ্র,লিগ্যাল এইড কমিটি, কাশফুল সোসাল ডেভলাপমেন্ট সোসাইটি, নারী ও শিশু কল্যাণ ফাউন্ডেশন এই সাংবাদিক সম্মেলন নিজেদের
আইনের শাসন, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার সুরক্ষার দায়বদ্ধতা থেকে এই মামলার অবিলম্বে পুনঃ তদন্ত ও সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমে আসামি রোকনের যথোপযুক্ত শাস্তি চান বলে জানান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here