গত মাসের শেষ দিকে অমিক্রনের প্রথম রোগী শনাক্ত হয় দক্ষিণ আফ্রিকায়। অল্প কয়েক দিনে এটি দ্রুত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ডব্লিউএইচও বলছে, সংক্রমণের হার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সংখ্যাও বাড়তে পারে। অমিক্রন ঠেকাতে এখন পর্যন্ত টিকার ওপরই জোর দিচ্ছে সংস্থাটি।
ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশের নেতারাও কঠোর বিধিনিষেধের সিদ্ধান্ত না নিয়ে টিকা দেওয়ার ওপর জোর দিচ্ছেন। তবে টিকা বণ্টনের ক্ষেত্রে বৈষম্য হচ্ছে এবং মহামারি মোকাবিলায় নেওয়া পদক্ষেপে সমন্বয় খুব প্রয়োজন উল্লেখ করে জাতিসংঘের মহাসচিব বলেছেন, সমন্বয়হীন পদক্ষেপ নিলে মহামারি মোকাবিলা করা সম্ভব নয়।
ফরাসি প্রধানমন্ত্রী জ্যঁ ক্যাসটেক্স বলেছেন, ইউরোপে করোনা বিদ্যুৎগতিতে ছড়াচ্ছে। বছরের শুরুতে এটি ফ্রান্সেও প্রভাব বিস্তার শুরু করবে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। যুক্তরাজ্যে ভ্রমণ ও সে দেশ থেকে লোকজনের আসা ঠেকাতে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে এ মন্তব্য করেন তিনি ।
যুক্তরাজ্যের একদল গবেষক বলছেন, অমিক্রনে সংক্রমিত ব্যক্তির দেহে ডেলটার চেয়ে মৃদু উপসর্গ দেখা দেওয়ার প্রমাণ পাননি তাঁরা। গবেষকেরা আরও বলছেন, এ অবস্থায় নতুন ধরনটি ততটা মারাত্মক না-ও হতে পারে এবং স্বাস্থ্যসেবার ওপর তেমন চাপ না-ও তৈরি করতে পারে—বিশেষজ্ঞদের ইতিপূর্বে করা এমন আশাবাদ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের সমীক্ষায় দেখা গেছে, অমিক্রনে পুনঃ সংক্রমণের আশঙ্কা ডেলটার চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি। তবে এখনই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত নেই বলে জানিয়েছেন গবেষকেরা।
করোনা মহামারি শুরুর পর গত বুধবার যুক্তরাজ্যে সংক্রমণ শনাক্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ পৌঁছায়। পরের দুই দিনে তা আরও বাড়ে। এ প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। অতিসংক্রামক ধরন অমিক্রন এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে। এ পর্যন্ত দেশটিতে ১৫ হাজারের বেশি মানুষের শরীরে ধরনটির উপস্থিতি মিলেছে। অমিক্রনে প্রথম মৃত্যুও হয়েছে দেশটিতে।
ওই সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, অমিক্রনের সংক্রমণে ডেলটা থেকে ভিন্নমাত্রায় রোগের তীব্রতা থাকার প্রমাণ (হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঝুঁকি ও উপসর্গের অবস্থা) পাওয়া যায়নি। তবে এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যমতে, অমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার হার তুলনামূলক কম।