মসজিদের নির্মাণ কাজে মুক্ত হস্তে দান করুন 

0
554
প্রতীকী ছবি
এম এ কাদেরঃ হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সংলগ্ন শাহপুর নতুন বাজার নিকটতম “শাহপুর পূর্ব পাড়া জামে মসজিদের নির্মাণের কাজ চলিতেছে।
ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অবগতির জন্য বলা হচ্ছে, মসজিদ নির্মাণ কাজে মুক্ত হস্তে দান করুন।
পূর্ণাঙ্গ মসজিদ নির্মাণে অনেক টাকা প্রয়োজন। তাই আপনাদের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।
এই দান কখনো বিফলে যাবেনা। এই দানের মাধ্যমে নিজেদের সওয়াবের খাতায় আরো কিছু সওয়াব যুক্ত করুন।
মসজিদ নির্মাণ বা নির্মাণের কাজে দান করলে যে সওয়াব পাবেন
মসজিদ হলো মুসলিম সমাজের মূলকেন্দ্র। এ কারণে রাসুল (সা.) হিজরতের প্রথম দিনই মসজিদ নির্মাণের কাজে আত্মনিয়োগ করেছেন। মদিনায় হিজরতের সময় যাত্রাবিরতিকালে তিনি কুবা নামক স্থানে ইসলামের প্রথম মসজিদ নির্মাণ করেন। পরে মদিনায় পৌঁছে তিনি মসজিদ-ই-নববী স্থাপন করেন। এবং সেখান থেকেই ইসলামের জ্যোতি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেন।
মসজিদ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণকারীদের মহান আল্লাহ ভীষণ পছন্দ করেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তারাই তো আল্লাহর মসজিদের আবাদ করবে, যারা ঈমান আনে আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি, সালাত কায়েম করে, জাকাত দেয় এবং আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ভয় করে না। অতএব আশা করা যায়, তারা হবে সৎপথপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত। (সুরা : তাওবা, আয়াত : ১৮)
হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মসজিদ নির্মাণ করবে, মহান আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে অনুরূপ ঘর তৈরি করে দেবেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৪৫০)
তাছাড়া মসজিদ নির্মাণ এমন একটি পুণ্যময় কাজ, যার সওয়াব মৃত্যুর পরও অব্যাহত থাকে। যত দিন সেই মসজিদে আল্লাহর ইবাদত হবে, তত দিন নির্মাণকারী এর সওয়াব পেতে থাকে। ইরশাদ হয়েছে, ‘সাত ধরনের আমলের প্রতিদান মৃত্যুর পর কবরেও জারি থাকে। ১. যে ব্যক্তি কাউকে দ্বিনি ইলম শিক্ষা দেবে। ২. যে নদী প্রবাহিত করতে সহযোগিতা করবে। ৩. অথবা কূপ খনন করবে। ৪. অথবা গাছ রোপণ করবে। ৫. অথবা মসজিদ নির্মাণ করবে। ৬. অথবা কোরআন বিতরণ করবে। ৭. অথবা সুসন্তান রেখে যাবে যে তার মৃত্যুর পর তার জন্য দোয়া করবে। (আল বাহরুজ জাখখার : ১৩/৪৮৪)
উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা বোঝা যায়, মসজিদ নির্মাণ অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। আল্লাহর প্রিয় হওয়ার মাধ্যম। কিন্তু শর্ত হলো, এতে কোনো রকমের অহমিকা, গৌরবের বিষ অনুপ্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। মসজিদ নির্মাণের মাধ্যমে সমাজে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করা যাবে না। মসজিদ নির্মাণ করতে হবে, একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। মসজিদ নিয়ে অহংকার করা কিয়ামতের আলামত। লোকেরা মসজিদ নিয়ে পরস্পর গৌরব ও অহংকারে মেতে না উঠা পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবে না। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৪৯)
তাই আমাদের উচিত একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় মসজিদ নির্মাণ করা। কারো সেই সামর্থ্য না থাকলে কমপক্ষে সহযোগিতা করবে। মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণে আত্মনিয়োগ করবে। মসজিদকে সর্বদা পরিচ্ছন্ন ও সুগন্ধিময় করে রাখবে।
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) পাড়ায় পাড়ায় মসজিদ নির্মাণ করার এবং তা পরিচ্ছন্ন ও সুগন্ধিময় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৫৫)
মসজিদ নির্মাণে সহযোগিতার ফজিলতঃ-
মুসলিম উম্মাহর কাছে অত্যান্ত প্রিয় ও মর্যাদাপূর্ণ স্থান মসজিদ। মসজিদ আল্লাহর ঘর। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে ‘মসজিদ মূলত আল্লাহর ঘর।’ (সুরা জিন : ১৮)। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম জায়গা মসজিদ, আর সবচেয়ে নিকৃষ্ট জায়গা বাজার।’ (মুসলিম : ১৫৬০)। তাই মসজিদের সঙ্গে মুসলিম উম্মাহর হৃদয় ও আত্মার সম্পর্ক।
আল্লাহর ঘর মসজিদ নির্মাণ, মেরামত, সংস্কার এবং এতে দান-সাহায্য করা মুসলিমদের কাছে অত্যন্ত আবেগ ও গৌরবের বিষয়। তাই তো পৃথিবীজুড়ে হাজারো লাখো দৃষ্টিনন্দন মসজিদ গড়ে উঠেছে মুসলিমদের স্বতঃস্ফূর্ত দানকৃত অর্থ-সম্পদে। আল্লাহ এর জন্য পুরস্কারও ঘোষণা করেছেন। হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য মসজিদ নির্মাণ করল, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন।’ (মুসলিম : ১২১৮; শুয়াবুল ঈমান : ২৯৩৯)
মসজিদ নির্মাণ করাকে হাদিসে সদকায়ে জারিয়া, অর্থাৎ চলমান সদকা হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। মসজিদ নির্মাণের জন্য দান করলে, যতদিন এই মসজিদে মানুষ ইবাদত বন্দিগী করবে ততদিন এর সওয়াব (কবরে বসেও) বান্দা পেতে থাকবেন। মসজিদ নির্মাণের পাশাপাশি মসজিদে ফ্যান দেওয়া, লাইট ব্যবস্থা করা কিংবা মসজিদের এসি ইত্যাদি ব্যবস্থা করে দিলেও এ সওয়াব পেতে থাকবে দানকারী।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘একজন মুমিন ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার আমলনামায় যা থেকে নেকি যোগ হবে তা হলো যদি সে শিক্ষা অর্জনের পর তা অপরকে শিক্ষা দেয় ও প্রচার করে, অথবা সৎ সন্তান রেখে যায়, অথবা ভালো বই রেখে যায়, অথবা মসজিদ নির্মাণ করে যায়, অথবা মুসাফিরের জন্য মেহমানখানা নির্মাণ করে যায, অথবা নদী খনন করে যায়।’ (ইবনে মাজা : ২৪২)
এতে বোঝে আসে খাঁটি নিয়তে কেবল আল্লাহর জন্য মসজিদ নির্মাণ করে গেলে কবরে বসে বসে এসব আমলের সওয়াব পেতে থাকবে বান্দা। তাই সাধ্যমতো বেশি থেকে বেশি মসজিদ নির্মাণ ও সংস্কারে জান-মাল দিয়ে সহায়তা করা চাই। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন।
আমিন,,,,,,,,,,,,,,৷।
সাহার্য্যার্থেঃ শাহপুর পূর্ব পাড়া গ্রাম বাসীর পক্ষে
মসজিদ নির্মাণ কমিটি।
প্রয়োজনে যোগাযোগ করুনঃ-01726573946  ইমাম সাহেব ( মাও. ক্বারী হাফেজ আব্দুল্লাহ আল মামুন)।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here