এম এ কাদেরঃ বাংলাদের মধ্যে সিলেট বিভাগে মাদ্রাসার শিক্ষার অন্য রকম কদর রয়েছে। ৩৬০ আউলিয়ার পদধূলিতে সিলেটের মাটিকে ওলী আউলিয়ার মাটি বলেও অনেকই সম্মান প্রদর্শন করে থাকেন এমনকি কা করেও যাচ্ছেন।
হযরত শাহজালাল ইয়ামিনের নামে বাংলাদেশের স্লোগানও হয় প্রতিনিয়ত। ওলী আউলিয়ার বাংলাদেশ শাহজালালের বাংলাদেশ। শাহ পরানের বাংলাদেশ। এমন স্লোগান অহরহ পূর্বে থেকে প্রচলিত হয়ে আসছে, যা কেয়ামত পর্যন্ত জারি থাকবে।
আমি সিলেট বিভাগের কৃতি সন্তান। আজ আপনাদের সামনে তুলে ধরা চেষ্টা করব মাদ্রাসায় আপনার সন্তান কে কেন মাদ্রাসায় পড়াশোনা করার জন্য প্রতিজ্ঞা বদ্ধ হবে – মোঃ আব্দুল কাদির।
সুশিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। সুশিক্ষিত জাতি আগামীর ভবিষ্যৎ। এ উপদেশবাণীগুলোর চেয়েও শিক্ষার ইতিহাস অনেক পুরনো। কারণ শিক্ষার ভালো ফল পাওয়ার পরই সম্ভবত এই উপদেশবাক্যগুলোর জন্ম।
মানবসভ্যতার বয়স যতদিন, শিক্ষার বয়সও ততদিন। কারণ মানুষকে সৃষ্টিকর্তা একজন জ্ঞানী ও খলিফা হিসেবে প্রেরণ করেছেন। উম্মতে মুহাম্মদির শিক্ষাব্যবস্থার সূচনা হয় সৃষ্টিকর্তার বাণী- পড় তোমার প্রভুর নামে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন (সূরা: আলাক, আয়াত-১)। মসজিদে নববীতে অবস্থিত ‘সুফফা’ হলো ইসলামের প্রথম শিক্ষাকেন্দ্র বা বিশ্ববিদ্যালয়। রাসূল সা: ছিলেন প্রথম শিক্ষক এবং সাহাবিগণ প্রথম ছাত্র। এখান থেকে ইসলামী শিক্ষার ইতিহাস শুরু হয়। খোলাফায়ে রাশেদিন, উমাইয়া ও আব্বাসীয় খলিফাদের যুগে ইসলামী শিক্ষার ব্যাপক উন্নতি ঘটে এবং শিক্ষাব্যবস্থা একটি পরিপূর্ণতা লাভ করে। মুসলিম শাসিত ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম শাসকগণ শিক্ষাব্যবস্থার ব্যাপক অবদান রাখেন। তারা ইসলামী শিক্ষার একটি বুনিয়াদি কাঠামো দাঁড় করিয়ে ছিলেন। শুধু রাজধানী দিল্লিতেই এক হাজার মাদরাসা ছিল। প্রফেসর ম্যাক্স মুলারের মতে ব্রিটিশ শাসনের আগে শুধু বাংলাতেই ৮০ হাজার মাদরাসা ছিল। ক্যাপ্টেন হেমিলটনের মতে, সিন্ধুর প্রসিদ্ধ ঠাট্টানগরীতে জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং শিল্পকলার ৪০০ প্রতিষ্ঠান ছিল।
১৭৫৭ সালে পলাশির যুদ্ধের পরাজয়ের পর উপমহাদেশের মুসলিম শাসনের ইতি ঘটে। সূচনা হয় ইংরেজ শাসন। ইংরেজরা তাদের শাসনব্যবস্থা দীর্ঘদিন টিকিয়ে রাখার জন্য উরারফব ধহফ ৎঁষব নীতি প্রয়োগ করে। মূল লক্ষ্য ছিল দ্বিমুখী শিক্ষাব্যবস্থা চালু করে মুসলমানদের মধ্যে জাতিগত বিভেদ সৃষ্টি করা।
১৮৩৫ সালে লর্ড মেকেলের সুপারিশকৃত শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে দুই বিপরীতমুখী শিক্ষাব্যবস্থা প্রচলনের উদ্দেশ্য সুস্পষ্টভাবে লক্ষণীয়। তাদের এ নীতি সফলতার সাথে বাস্তবায়ন হয়েছে। ব্রিটিশ আমাদের এ দেশ থেকে চলে গেছে সেই ১৯৪৭ সালে ঠিকই কিন্তু তাদের সৃষ্ট শিক্ষাব্যবস্থা আজো অক্ষুণœ আছে। এ দীর্ঘ সময়ে পাঠ্যসূচিতে কিছুটা পরিবর্তন এলেও শিক্ষানীতির মূল কাঠামো আজো অপরিবর্তিত। কিন্তু আদর্শ জাতি গঠনে মাদরাসা।