জালাল উদ্দীন লস্কর, মাধবপুর থেকেঃ শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের সুপারিশ অগ্রাহ্য করে জাল ও অনুমোদনহীন সনদধারী ২ শিক্ষকের বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি সংস্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।সম্প্রতি এ বিষয়টি জোরালোভাবে আলোচনায় আসে।তারপরও রহস্যজনকভাবে কালক্ষেপন করছেন প্রতিষ্টান প্রধান।অপরদিকে একই প্রতিষ্টানে অনুমোদনহীন সনদ দিয়ে ২০১০ সালে এক কম্পিউটার শিক্ষকের এমপিওভুক্তির বিষয়েও আপত্তি জানিয়েছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা বিভাগ।
জানা গেছে হবিগঞ্জ জেলা মাধবপুর উপজেলার ১০নং ইউ’পির ছাতিয়াইন বিশ্বনাথ হাইস্কুল এন্ড কলেজের হিন্দু ধর্মের শিক্ষক স্নিগ্ধা রানী দাশের শিক্ষক নিবন্ধন সনদটি জাল মর্মে নিশ্চিত হয়ে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের অডিট টিম ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর বেসরকারী শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের কাছে ৩৭.১৯.০০০০৪.০৫২.১৬.০০৬.২০.৫ নম্বর স্মারকে এক পত্র মারফত রিপোর্ট করে।ওই রিপোর্টে অডিট টিম কর্তৃক স্নিগ্ধা রানী দাশের নিবন্ধন সনদটি দালিলিকভাবে ভুয়া ও জাল প্রমানিত হওয়ায় তার নিয়োগকালীন সময় ১/১/২০১২ সাল থেকে ২৮/২/২০১৯ সাল পর্যন্ত সময়কালে এমপিওভুক্ত ( ইনডেক্স নম্বরঃ১০৬৮৮৫৪ ) শিক্ষক হিসাবে বেতনের সরকারী অংশ বাবদ প্রাপ্ত ১০ লাখ ৬ হাজার ৮৬০ টাকা সহ তৎপরবর্তীকালে গৃহীত সমুদয় টাকা সরকারী কোষাগারে ফেরতযোগ্য মর্মে এনটিআরসিএ-কে অবগত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়।
ওই সুপারিশের প্রেক্ষিতে ১৯ জানুয়ারী ২০২১ ইংরেজী তারিখে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা বিভাগের পরিচালক বরাবরে ৩৭.০৫.০০০০.১০.০৫.০০২.২০.৬৫ স্মারকে এনটিআরসিএ এর সহকারী পরিচালক তাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক যাচাই ও সুপারিশ পত্রে স্নিগ্ধা রানী দাশের নিবন্ধন সনদটি জাল বলে উল্লেখ করে উক্ত শিক্ষকের নামে জালিয়াতির মামলা করে তার অফিসকে অবগত করতে বলা হয়।চিঠির অনুলিপি এনটিআরসিএ-র ওয়েবসাইটে আপলোড করার জন্য এর একটি কপি সংস্থাটির সিস্টেম এনালিস্টকে দেওয়ার সাথে সাথে রমনা থানার ওসিকেও অনুলিপি দেওয়ার কথা চিঠিতেই উল্লেখ রয়েছে।কিন্তু এরপর বিষয়টি অদৃশ্য কারনে ধামাচাপা পড়ে যায়।
আর এই সুযোগে স্নিগ্ধা রানী দাশও যথারীতি বেতন ভাতা উত্তোলণ করতে থাকেন। সম্প্রতি স্নিগ্ধা ইস্যুটি প্রেস ও টেলিভিশন মিডিয়ার কল্যানে ব্যাপকভাবে সামনে আসলে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। তা নিয়ে এলাকা জুড়ে চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড় !
প্রতিষ্টান প্রধানকে জেলা শিক্ষা অফিসার ডেকে পাঠান।সর্বশেষ ফেব্রুয়ারী-২১ইং গত শনিবারেও তাকে ওই প্রতিষ্টানের অফিসে দেখা গেছে।পরে প্রতিষ্টান প্রধান দাবি করেন,তাকে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করা থেকে বিরত রাখা হয়েছে।তবে তাকে বিদ্যালয়ে আসতে নিষেধ দেওয়া হবে বলেও ওইদিন তিনি জানান।তবে এনটিআরসিএ-র নির্দেশনা অনুযায়ী কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না জানতে চাইলে তিনি এরকম কোনো চিঠি পাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।তবে এ বিষয়টি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও মাধবপুরের ইউএনও দেখবেন বলেও জানান তিনি।কয়েকদিনের মধ্যেই সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে বলেও জানান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হারুনুর রশিদ।
তবে টাকা ফেরত সংক্রান্ত একটি চিঠি পেয়েছেন বলে দাবি করলেও এর কোনো কপি দেখাতে পারেননি।উক্ত শিক্ষক নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার পর থেকে বিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে বেতনের বিদ্যালয় প্রদত্ত অংশ হিসাবে যে টাকা নিয়েছেন সে টাকা আদায়যোগ্য কী না জিজ্ঞাসা করলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বলেন, এ টাকার বিষয়টা ইগনোর করেন।তিনি তো (অভিযুক্ত শিক্ষক) বিদ্যালয়ে শ্রম দিয়েছেন বলেও দাবি করেন প্রতিষ্টান প্রধান।