মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ডাকবাংলোর ভিতরে পাখিদের অভয়ারন্যের গাছ ডালপালা কাটার ভিডিও ধারণের সময় মাধবপুর রিপোর্টার্স ইউনিটির সিনিয়র সহ সভাপতি ও দৈনিক কালবেলার মাধবপুর উপজেলা প্রতিনিধি এবং মাধবপুর উপজেলার পাখি প্রেমিক সোসাইটি’র আহব্বায়ক সাংবাদিক মুজাহিদ মসি’র উপর পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (২৯শে ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার সময় উপজেলার ডাক বাংলোর সিমানার ভিতরে পাখিদের অভয়ারণ্যের গাছের ডালপালা কাটার সময় ভিডিও ও ছবি ধারণ করতে গেলে মাধবপুর পৌরসভার মেয়র হাবিবুর রহমান মানিক ও তার লোকজন সাংবাদিকের উপর হামলা করে মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে নিয়ে যায়। পরে মাধবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ রকিবুল ইসলাম খান এর মাধ্যমে মোবাইল ফোনটি উদ্ধার হয়।
এবিষয়ে মাধবপুর পৌর মেয়র হাবিবুর রহমান মানিক এর কাছে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করে বলেন, এমন ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। বরং আমি না থাকলে যারা গাছের ডালপালা কেটেছে তারা মেরে ফেলত। আর সাংবাদিককের মোবাইল ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহিরের কাছে সে নিজেই জমা দেন।
তারই তথ্যের ভিত্তিতে কাউন্সিলর জহিরের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ঐ ঘটনার শেষ প্রান্তের সময় আমি উপস্থিত হওয়ার পর মোবাইল টি আমার হাতে জমা করেন, ইষ্টিকুটুম রেস্টুরেন্টের মালিক সাংবাদিক উজ্জ্বল মিয়া। পরে মাধবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ এর ডাকে সাড়া দিয়ে মোবাইলটি থানা পুলিশের কাছে দিয়ে আসি।
অন্য দিকে উজ্জ্বলের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ঘটনার পরপরই মেয়র হাবিবুর রহমান মানিক মোবাইলটি আমার হাতে দেওয়ার পর বিষয়টি সমঝোজতা করার চেষ্টা করি। বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়ায় মোবাইলটি কাউন্সিলর জহিরের কাছে সমঝিয়ে দেই।
সাংবাদিক মুজাহিদ মসি বলেন ,স্থানীয় বেদে সম্প্রদায়ের লোকজনকে নাগরিকত্বসহ অন্যান্য সুবিধা না দেয়ায় আমি একাধিকবার নিউজ করি। নিউজের কারনে মেয়র’কে সরকারি তদন্তের মুখোমুখিতে আনায় তিনি আমার উপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জেরে আমার সাথে এমন ব্যবহার করেছে। আজকের ঘটনায় আমি লিখিত ভাবে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ডিএফও ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, উপজেলার ডাকবাংলো এলাকাটি সংরক্ষিত, তাই এলাকার আশেপাশে গাছ কাটা নিষেধ। গাছ কাটার ছবি তোলায় সাংবাদিক মুজাহিদ মসির উপর হামলার ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং এটি তদন্তের দাবি রাখে।
এ ব্যাপারে মাধবপুর থানার ওসি রকিবুল ইসলাম খান জানান, মোবাইলটি উদ্ধারের জন্যে সেকেন্ড অফিসার এসআই শামস ই তাব্রিজকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। অভিযোগ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন মাধবপুর রিপোর্টার্স ইউনিটির সকল সদস্য বৃন্দ।