এফআইআর টিভি অনলাইন ডেস্কঃ গত ৪ অক্টোবর থেকে ২২ দিন সারাদেশে মা ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। শেষ সময়ে ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীসহ সাগর মোহনায় জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ। পূর্ণিমা আর কয়েক দিনের গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির কারণে জলসীমায় ইলিশের পরিমাণও বেড়ে গেছে বলে মনে করছেন মৎস্য বিশেষজ্ঞরা।
আশ্বিনের শুরু থেকেই জেলেদের জালে ধরা পড়তে শুরু করছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। দিন যতই যাচ্ছে ততই বাড়ছে ইলিশের পরিমাণ। ইলিশ ধরা পড়ায় মৎস্য ঘাটগুলো সরগরম হয়ে উঠেছে। আর বিভিন্ন সাইজের ইলিশে সয়লাব ঘাটগুলো।
জেলেরা আড়তে ইলিশ বিক্রি করে পুনরায় ছুটছেন নদীতে। যেন দম ফেলারও সুযোগ নেই। সব মিলিয়ে কর্মব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। জেলেদের ইলিশ চলে যাচ্ছে ঢাকা, বরিশাল, চাঁদপুর, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।
তবে ভারতে রফতানি শুরু হওয়ায় স্থানীয় বাজারে ইলিশের দাম চড়া বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আর মৌসুম বিলম্বিত হওয়ায় আগামী ৪ অক্টোবর থেকে শুরু মা ইলিশ রক্ষা অভিযানের খবরে শংকিত জেলেরা।
কথা হয় তজুমউদ্দিনে মেঘনার তীরবর্তী শশীগঞ্জ স্লুইসগেট এলাকার জেলে আলমগীর মাঝির সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘প্রথম দিকে নদীত ইলিশ না পাইলেও এহন বেমালা (প্রচুর) ইলিশ ওডে। তয় ১০টা ইলিশ ওটলে ৭টার পেডে ডিম পাওয়া যায়। সব মাছের পেডে ডিম হয় নাই। এহন খালি খালি অভিযান দিছে আরও ৫ দিন পরে দিলে ভালো হইতো।’
ভোলা সদর উপজেলার চডার মাথা মাছঘাটের শফিজল মাঝির সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, গাঙে এহন মাছ পড়ে আমরা ধারদেনা দিমু। এইয়ার মধ্যে অভিযান দিছে। এই অভিযানের ২২ দিন সরকার এনজিও কিস্তি বন্ধ রাখলে আমাগো লইগা ভালো ওয়।
অভিযানের সময় এনজিওর সারেরা বাড়িত আইয়া জালায়। হেগো জালায় আমরা চুরি কইরা গাঙে যাই। কোস্টগার্ডে দেখলে ধইরা নিয়া জেল জরিবানা করে। এই অভিযানের লাভ কী? বলে জানান তিনি।
তুলাতুলি মাছঘাটের আড়তদার নোয়াব মিয়া বলেন, এখন প্রচুর পরিমাণে ইলিশ পড়তেছে। আমরা আড়তদাররা জেলেদের থেকে মাছ কিনে দেশের বিভিন্ন জেলায় মোকামের চাহিদা পূরণ করতে পারছি। ভারতে ইলিশ রফতানি শুরু হওয়ায় দামটা চড়া রয়েছে।
নিষেধাজ্ঞাকালীন জেলার ১ লাখ ৩০ হাজার নিবন্ধিত জেলের জন্য ২০ কেজি করে ২ হাজার ৬৪০ টন ভিজিএফের চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সরকারের নির্দেশ অমান্য করে কেউ যাতে এ সময় মাছ ধরতে নদীতে নামতে না পারেন, সেজন্য নদ-নদীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতও পরিচালনা করা হবে বলে জানা গেছে।
ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে ও ডিম ছাড়ার সুযোগ দিতে ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এ সময় ইলিশ আহরণ, বিপণন, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, মজুত ও বিনিময় নিষিদ্ধ থাকবে।
এসএম আজহারুল ইসলাম, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, ভোলা
জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গেল অর্থবছরে ভোলায় ১ লাখ ৭৫ হাজার ৩৯০ টন ইলিশ উৎপাদন হয়েছে। যা দেশের মোট ইলিশ উৎপাদনের মধ্যে ৩৩ ভাগ। চলতি অর্থবছর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৩৯০ টন। মৌসুমের প্রথম ৩ মাসেই ধরা পড়েছে প্রায় ৫২ হাজার টন ইলিশ।
চুনারুঘাটে ৩০কেজি গাঁজাসহ গ্রেফতার ১