এফআইআর টিভি অনলাইন ডেস্কঃ হবিগঞ্জ জেলার কৃতিসন্তান, শাহ এ এম এস কিবরিয়া (পুরো নামঃ শাহ আবু মোহাম্মদ শামসুল কিবরিয়া, জন্ম: মে ১, ১৯৩১ – মৃত্যু: ২৭ জানুয়ারি, ২০০৫) বাংলাদেশী অর্থনীতিবিদ, কূটনীতিবিদ এবং রাজনীতিবিদ।
শাহ এ এম এস কিবরিয়া
|
|
---|---|
![]() |
|
অর্থমন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার | |
কাজের মেয়াদ ১৯৯৬ – ২০০১ |
|
পূর্বসূরী | সাইফুর রহমান |
উত্তরসূরী | সাইফুর রহমান |
নির্বাহী সচিব, এসকাপ | |
কাজের মেয়াদ ১৯৮১ – ১৯৯২ |
|
পূর্বসূরী | জে বি পি মারামিস |
উত্তরসূরী | রাফিউদ্দিন আহমেদ |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ১ মে ১৯৩১ হবিগঞ্জ জেলা, ব্রিটিশ ভারত |
মৃত্যু | ২৭ জানুয়ারি ২০০৫ (বয়স ৭৩) |
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
ধর্ম | ইসলাম |
১৯৫৪ সালে তৎকালীন পাকিস্তানের বৈদেশিক বিভাগে যোগদান করে কিবরিয়া পররাষ্ট্রবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক বিষয়ক বিভাগের মহাপরিচালক হয়েছিলেন। ১৯৮১-১৯৯২ সালের মধ্যেকার সময়ে তিনি,জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক কমিশন (এসকাপ)-এর প্রধান নির্বাহী ছিলেন। এছাড়াও, অর্থমন্ত্রী হিসেবে কিবরিয়া ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে এম.পি বা সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
শাহ কিবরিয়া জানুয়ারি ২৭, ২০০৫ তারিখে তার নির্বাচনী এলাকা হবিগঞ্জের গ্রেনেড হামলায় মর্মান্তিকভাবে নিহত হন।
আজ সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এস এম কিবরিয়ার ১৭ তম শাহাদতবার্ষিকী
২৭ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ১৭ তম শাহাদত বার্ষিকী। ২০০৫ সালের ওই দিনে তিনি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে ঈদ পরবর্তী এক জনসভায় গ্রেণেড হামলায় নির্মমভাবে নিহত হন। শাহ এএমএস কিবরিয়ার ১৭তম মৃতুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা ও হবিগঞ্জে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
হবিগঞ্জে কিবরিয়া ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সকাল ৯ টায় আরডিহল প্রাঙ্গণে স্থাপিত প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তক অর্পন, মোনাজাত, শীতবস্ত্র বিতরণ ও স্থিরচিত্র প্রদর্শনী করা হবে। এছাড়া ঢাকার বনানীতে অবস্থিত মরহুমের কবরস্থানে সকাল ১১টায় পুস্পস্তবক অর্পণ করবে কিবরিয়া পরিবার ও গণঅধিকার পরিষদ। পরে তারা সেখানে জিয়ারত ও দোয়া মাহফিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। কিবরিয়ার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়া এই কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানান।
ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, সময় আসিতেছে আমার বাবাসহ সকল গুম ও হত্যার বিচার হবে। তিনি বলেন, আমার বাবা সারা জীবন দেশের জন্য কাজ করেছেন। বৈদ্যারবাজারে আওয়ামী লীগের এক জনসভায় তিনি আহত হলে কয়েক ঘন্টা পর মারা যান। এর পর ১৬ বছর আমার বাবার হত্যা নিয়ে হয়েছে প্রহসন। আমার বাবার হত্যার বিচার নিয়ে এভাবে আর কতদিন চলবে।
শাহ এ এম এস কিবরিয়া কর্মজীবনে পররাষ্ট্র সচিব, এসকাপের নির্বাহী সচিবসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন শেষে অবসর গ্রহণ করার পর ১৯৯৪ সালে আওয়ামীলীগে যোগদান করেন। পরে তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে তিনি অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০০১ সালে তিনি হবিগঞ্জ-৩ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি ছিলেন আওয়ামীলীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়কারী। মৃদুভাষন নামে একটি সাময়িকির সম্পাদক ছিলেন তিনি। মুক্তিযোদ্ধের সময় তিনি প্রবাসে দেশের পক্ষে কাজ করেন। ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি বিকেলে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে ঈদ পরবর্তী এক জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন তৎকালীন হবিগঞ্জ-৩ আসনের এমপি সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া। জনসভা ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। বক্তব্য শেষে যখন তিনি মঞ্চ থেকে নেমে সহকর্মীদের নিয়ে বৈদ্যের বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গেইটে আসেন তখনই দিনের আলো নিভে প্রায় সন্ধ্যা। হঠাৎ করেই বিকট শব্দ। হুড়োহুড়িতে চারদিকে গগনবিদারী চিৎকার। আর্জেস গ্রেনেডের আঘাতে অনেকেই ক্ষতবিক্ষত। সেখানে শাহ এ এমএস কিবরিয়া গুরুতর আহত হলে ঢাকা নেয়ার পর মৃত্যু বরণ করেন। ঘটনাস্থলে মারা যান তার ভাতিজা শাহ মঞ্জুরুল হুদা ও এলাকার তিনজন। আহত হন আরও ৭০জন।
এ ঘটনার পরদিন ২৮ জানুয়ারি তৎকালীন হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ খান এমপি বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দু’টি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তে কাজ করে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন সংস্থা। কিন্তু মামলাটির স্বাভাবিক তদন্ত না হয়ে দলীয় বিবেচনায় পরিচালিত হতে থাকে। পরে মামলার তিন দফা চার্জশীট দেয়ার পর হত্যা এবং বিস্ফোরক মামলা দুটি সিলেটের দ্রুত বিচার আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। কিন্তু স্বাক্ষীদের উপস্থিতি না থাকায় থমকে আছে বিচার কাজ। উভয় মামলায় ১৭৩জন স্বাক্ষী থাকলেও হত্যা মামলায় ৪৪ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।