বিভাগীয় প্রতিনিধিঃ টাকা ছাড়া ব্যবসা এই গ্রহে কল্পনাও করা যায় না। টাকা দিয়ে পণ্য ক্রয় করে বিক্রি করাই মূলত নিয়ম। কিন্তু টাকা দিয়ে টাকা কিনে সেই টাকাই আবার টাকার কাছে বিক্রি করার কথা কি শোনা যায়! বিষয়টা একটু খটকা লাগারই কথা।
সিলেটের পুরাতন হকার মার্কেট পয়েন্ট, ক্বীন ব্রিজসহ নগরীর কয়েকটি জায়গায় দেখা মিলে এদের। এরকমই একজন টাকার ব্যবসায়ী দুলাল মিয়ার সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের।
সিলেট নগরীর বন্দরবাজার এলাকায় করিম উল্লাহ মার্কেটের সামনের রাস্তায় নতুন টাকার বান্ডিল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ষাটোর্ধ দুলাল মিয়া নগরীর অনেকের কাছেই পরিচিত মুখ।
বলছিলেন দুলাল মিয়া, ‘সকাল ১১-১২ টায় আসি। বাসায় যেতে যেতে রাত ১০টা বেজে যায়। মুক্তিযুদ্ধের ১০-১২ বছর পরেই কুমিল্লার চাঁদপুর থেকে জীবিকার তাগিদে সিলেট আসা। প্রথমে কিছুদিন ফেরিওয়ালার ব্যবসা করার পর স্থানীয় কিছু লোকের কথায় খুঁজে পাই ব্যতিক্রমী এই ব্যবসা।
প্রথম দিকে কিছুটা সমস্যা হলেও দুলাল মিয়া এখন পাক্কা একজন ‘টাকার ব্যবসায়ী’। বর্তমানে সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করেন তিনি। ৩ মেয়ে ২ ছেলেসহ মোট ৭ জনের পরিবারে তিনিই একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। টাকার ব্যবসার আয় থেকেই সংসার চলে তার।
দুলাল মিয়া জানান, প্রতিদিন ব্যাংক থেকে ১০-১২ হাজার টাকার নতুন নোট নিয়ে আসেন। যার মধ্যে ১০০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫ টাকার নোট পর্যন্ত সবই থাকে। তারপর কিছু মুনাফার বিনিময়ে সেগুলো দিয়ে ব্যবসা করেন।
দুলাল মিয়ার মতো নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে আরও ১০-১৫ জন মানুষ এরকম চকচকে টাকার বান্ডিল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। বড় টাকার ভাংতি কিংবা কাটা-ছেঁড়া পুরাতন কোন নোটের বিনিময়ে নতুন বা ভাংতি টাকা দেওয়াই যাদের কাজ। বিনিময়ে লোকেরা খুশি হয়ে যাই দেন তার উপর ভর করেই চলে তাদের পরিবার।
মইনুল বলেন, ‘ঈদের দিনে বাচ্চাদের সেলামী দেওয়া লাগবে। পুরাতন টাকা দিয়ে কি আর কোমলমতি শিশুদের সেলামী দিতে পারি? আর ব্যাংকে গেলেও প্রচুর ভোগান্তি পোহাতে হয়। তাই নতুন টাকার চকচকে নোট নিতে প্রতিবার উনাদের কাছেই ছুটে আসি।’