স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চলমান অভিযান ইতিবাচক, তদারকির জন্য একটি নিরপেক্ষ কর্তৃপক্ষ গঠনের আহব্বান –  টিআইবির

0
228
এফআইআর টিভি অনলাইন ডেস্কঃ সারাদেশে অবৈধ বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চলমান অভিযান ইতিবাচক; তবে দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বেড়াজাল ছিন্ন করে খাতটির সার্বিক সুশাসন নিশ্চিতে যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। বরং দীর্ঘমেয়াদি ও স্থায়ী সমাধানের লক্ষে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও রোগ-নির্ণয় কেন্দ্রগুলোর সেবার মান পরিবীক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ ও সর্বোপরি সুশাসন নিশ্চিতের জন্য একটি নিরপেক্ষ তদারকি কর্তৃপক্ষ গঠনের দাবি জানাচ্ছে সংস্থাটি।
বেসরকারি চিকিৎসাসেবা খাতে সুসাশনের চ্যালেঞ্জ বিষয়ে টিআইবির সাম্প্রতিক গবেষণার উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক পহেলা জুন বুধবার ড. ইফতেখারুজ্জামান বলছেন, “অভিযান শুরুর মাত্র একদিনের মাথায় বিপুল সংখ্যক নতুন লাইসেন্স ও নবায়নের আবেদন জমা পড়ায় বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতে যে যথাযথ তদারকির প্রকটতর অভাব ছিলো, তা প্রমাণিত হয়েছে। এমন অবস্থায় চলমান অভিযান বেহাল ও অরাজকতাপূর্ণ খাতটিতে সুশাসন নিশ্চিতে কতোটা কার্যকর হবে সেটি প্রশ্ন সাপেক্ষ। দীর্ঘমেয়াদে সুফল পেতে বেসরকারি চিকিৎসাসেবা নিয়ন্ত্রণ ও তদারকির জন্য দীর্ঘ প্রতিক্ষীত খসড়া আইনটি চূড়ান্ত করে দ্রুততার সাথে আইন হিসেবে প্রণয়ন করতে হবে ও তার কার্যকর বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। একইসাথে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতের মান পরিবীক্ষণ এবং সুশাসন নিশ্চিতে একটি শক্তিশালী নিরপেক্ষ তদারকি কর্তৃপক্ষ গঠন জরুরি।”
নিয়মিতভাবে এ জাতীয় অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি জমাকৃত আবেদনসমূহ যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই ও আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে যোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে লাইসেন্স প্রদান ও নবায়ন করা হয়, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করছে টিআইবি। এক্ষেত্রে যে-কোনো ধরনের রাজনৈতিক প্রভাব, ভয়-ভীতি ও করুণার ঊর্ধ্বে থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যাতে নির্মোহভাবে তার দায়িত্ব পালন করতে পারে, তা নিশ্চিতেরও আহব্বান জানায় সংস্থাটি। কোভিডকালীন রিজেন্ট হাসপাতাল কে উদহারণ দিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, “বিনা লাইসেন্স ও মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্সসহ স্বাস্থ্যসেবার নিয়ম-নীতি ভঙ্গ করে যেসব প্রতিষ্ঠান এতোদিন কার্যক্রম পরিচালনা করেছে, সেইসব প্রতিষ্ঠানের মালিকানার সাথে সংশ্লিষ্টদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তির সম্মুখীন করতে হবে। একইসাথে নিয়ম-বিরুদ্ধ এসব কর্মকাÐকে এতোদিন যারা বিভিন্নভাবে সুরক্ষা ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন তাদেরকেও জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় সর্ষের ভেতরে থাকা ভুত তাড়ানো সম্ভব হবে না !
টিআইবি‘বেসরকারি চিকিৎসাসেবা : সুসাশনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শিরোনামে ২০১৮ সালের ০৭ ফেব্রুয়ারী একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে (full_report_Private_Health_060218.pdf (ti-bangladesh.org)। যেখানে একদিকে বাণিজ্যিকীকরণের প্রবণতা, মুনাফা-কেন্দ্রিক সেবা ব্যবস্থা, ও অন্যদিকে সরকারের মনোযোগ, পরিদর্শন ও তদারকির ঘাটতির কারণে সাধারণ সেবাগ্রহীতারা যে জিম্মি হয়ে পড়েছেন, তা বিশদভাবে তুলে ধরা হয়েছিলো। স্বাস্থ্য সেবার ন্যায় একটি মৌলিক বিষয়, যেখানে মানুষের জীবন-মরণের প্রশ্ন জড়িত সেখানে মুনাফা-বিভোর ও অমানবিকভাবে দুর্নীতি পরায়নদের হাতে জিম্মিদশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের অপরিহার্য দায়িত্ব বলে মনে করছে টিআইবি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here