আকিকুর রহমান রুমন, বিশেষ প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সর্দার নির্ধারনের নির্বাচন ২৮জানুয়ারি হওয়ার দিন ধার্য্য থাকলেও তা আর হচ্ছেনা।
গতকাল এবিষয়ে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহানের সাথে মুঠোফোনে আলাপ আলোচনা করলে উনার দ্রুত পদক্ষেপের কারনে তা বন্ধ করেছে বানিয়াচং থানা পুলিশ প্রশাসন।
এই নির্বাচনের বিষয়টি পর্যবেক্ষন করেন হবিগঞ্জের বানিয়াচং আজমিরীগঞ্জ সার্কেল পলাশ রঞ্জন দে তিনি এর সত্যতা পেয়ে বানিয়াচং থানাকে নির্দেশ দেন নির্বাচনের প্রার্থী ও নির্বাচন কমিটির লোকজনকে থানায় আসার জন্য।
পড়ে তাদেরকে থানা থেকে সার্কেলের বরাত দিয়ে থানায় উপস্থিত হওয়ার জন্য বলা হয়।
এমন মেসেজ পেয়ে সকল প্রার্থী ও কমিটির লোকজন থানায় উপস্থিত হন।
পরে হবিগঞ্জ সার্কেলের উপস্থিতিতে ২৮জানুয়ারি তাদের নির্বাচন বর্জন ও বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এমনকি সবাই এবিষয়টি মেনে নিয়ে থানা থেকে নির্বাচন না করার অঙ্গীকার ব্যাক্ত করে আসেন।
এবিষয়টি থানার সেকেন্ড অফিসার সামছুল আলম বর্তমানে থানায় ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে থাকা অবস্থায় রাত ১১টা ৮মিনিটে ফোন দিয়ে সত্যতা নিশ্চিত করে এসব তথ্য প্রদান করেন।
উল্লেখ্য,
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে ওমিক্রন নিষেধাজ্ঞার মধ্যে একটি মহল্লার ভোটের আয়োজন চলার খবর জানিয়েছেন এলাকাবাসী।এজন্য হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও বানিয়াচং উপজেলা প্রশাসনের কাছ থেকেও কোন প্রকার অনুমতি নেওয়া হয়নি এই নির্বাচনের।
এলাকাবাসী সূত্রে ও সরজমিন পরিদর্শনে জানা যায়,বানিয়াচং উপজেলা সদরের ১নং উত্তর পূর্ব ইউনিয়ন ও ৩ নং দক্ষিন-পূর্ব ইউনিয়নে অবস্থিত এই পুরানবাগ সাত মহল্লার ছান্দটি।
ছান্দের একজন প্রধান সর্দার(সভাপতি)নির্বাচিত করার জন্য ৯বিশিষ্ট একটি কার্যকরি কমিটি গঠন করা হয়।
এবং চলতি মাসের ২৮জানুয়ারী(শক্রুবার)নির্বাচনের দিন ধার্য্য করে নির্বাচন কমিশন।
এই নির্বাচনে সভাপতি নির্বাচিত হতে সাত মহল্লার ছান্দ থেকে ৩জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেন।
আলহাজ্ব মোঃআবুল হুসেন(ছাতা)প্রতিক,সাঈদ আহমদ খান খালেদ(খেজুর গাছ)প্রতিক ও মতিউর রহমান(চেয়ার) প্রতিক নিয়ে নির্বাচনের প্রচার প্রচারনা সভা ও উঠান বৈঠকের মতো আয়োজন করে সমাবেশও চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের সমর্থকদের নিয়ে প্রার্থীগন।
এই নির্বাচনকে ঘিরে ৩প্রার্থীর পোস্টেরে ছেয়ে গেছে পুরো ছান্দ।আর তাদের নির্বাচনের কেন্দ্র হিসেবে বেঁচে নেওয়া হয়েছে তুষার স্মৃতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে।
সকাল ৮টা থেকে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে ছান্দবাসীর ভোট।
এদিকে সারাদেশে যখন মহামারী করোনার নতুন ভ্যারিয়েশন ওমিক্রন নিয়ে সরকার ও স্বাস্থ্য বিভাগ চিন্তিত।
ঠিক তখনই ব্যাপক লোকসমাগম করে ভোটের আয়োজন করাটাও এক ধরনের তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মনে করেন সচেতন মহল এবং এমনটাই দাবী তাদের।ওমিক্রনের মোকাবেলায় ইতিমধ্যে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টান বন্ধ ও বিভিন্ন প্রতিষ্টান এবং যানবাহনে সীমিত চলাচলের ঘোষনা দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
এই নির্বাচন নিয়েও চলছে অনেক আলাপ আলোচনা ও সমালোচনা।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদ্মাসন সিংহ সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,মহল্লার ভোট আয়োজনের কোন অনুমতি দেওয়া হয় নাই।
তারা আমার কাছে অনুমতির জন্য আসছিলো কিন্তু আমি দেশের এই রকম পরিস্থিতিতে অনুমতি দিতে পারিনা।
আমি এবিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নিব।
এব্যাপারে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান এর সাথে মুঠোফোন ৬টা ৮ মিনিটে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,এবিষয়ে তিনি অবগত নন এবং কোন মেসেজও পাননি।তবে তিনি শীঘ্রই এবিষয়ে খুঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে জানাবেন বলে জানান।
এব্যাপারে সভাপতি প্রার্থী আলহাজ্ব মোঃআবুল হোসেন মিয়ার সাথে মুঠোফোনে রাত ৬টা ৩৩মিনিটে যোগাযোগ করা হলে,তিনি একটি মিটিংয়ে ব্যাস্ত রয়েছেন বলে কোন বক্তব্য না দিয়ে লাইনটি কেটে দেন।
সভাপতি প্রার্থী মতিউর রহমানের সাথে মুঠোফোন রাত ৬টা ৪৭মিনিটে যোগাযোগ করা হলে,তিনিও একটি মিটিংয়ে ব্যাস্ত রয়েছেন বলে এবিষয়ে কোন প্রকার বক্তব্য না দিয়েই লাইনটি কেটে দেন।
সর্বশেষ সভাপতি প্রার্থী সাঈদ আহমদ খান(খালেদ)মিয়ার সাথে মুঠোফোন রাত ৭টা ১৯মিনিটে যোগাযোগ করা হলে তিনি নির্বাচনের কথা স্বীকার করে জানান,
আমরা কেউই সরকারি ভাবে অনুমতি নেইনি তবে এটা কার্যকরি কমিটির লোকজন নিয়েছেন কিনা তা তিনি জানেননা।
তবে এখন তিনিসহ সবাইকে সার্কেল মহোদয়ের কথা বলে থানায় ডাকা হয়েছে।
তবে আগামীকাল নির্বাচন হবে কিনা এটা তিনি আর নিশ্চিত করে কিছুই বলতে পারেননি।
অন্যদিকে সরজমিন ঘুরে এবং ৩জন প্রার্থীর মধ্যে একজন প্রার্থীর লোকজনের আলাপ আলোচনা এমনও শুনা যাচ্ছে,যদি তাদের ফলাফল বিপক্ষে যায় আর ছান্দবাসী বেঈমানী করে।
তাহলে সাথে সাথেই বেঈমানদেরকে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেওয়ারও হুশিয়ারী উচ্চারিত হয় প্রার্থীর আত্বীয় স্বজন ও সমর্থকদের কাছ থেকে।
এই নির্বাচনকে ঘিরে ছান্দের নিরীহ কিছু অসহায় লোকজন পরেছেন আবার মহা বিপদে।
তারা অনেকেই বলেন,যদি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোন সংঘর্ষের ঘটনাই ঘটে তাহলে আমাদের উপায় কি হবে।এজন্য আমরা বর্তমানে খুবই আতংকিত অবস্থার মধ্যে আছি।
তাই আমরা সরকারের নিকট সু-দৃষ্টি কামনা করছি এবং এই নির্বাচনটি বন্ধ করার জন্য বিনীত ভাবে আহবান জানাচ্ছি উচ্চ পদস্ত অফিসারগনদের কাছে।এছাড়াও তারা এ বিষয়টিকে তড়িৎ গতিতে দেখে একটা ব্যাবস্হা নেওয়ার জোরদাবী জানান।
গুরুত্বপূর্ণ আরও ৩টি পদ বাদ দিয়ে শুধু মাত্র ১টি পদে নির্বাচন হওয়ার কারনে এনিয়েও রয়েছে ছান্দবাসীর নানান গুঞ্জন ও সমালোচনা।