এফআইআর টিভি অনলাইন ডেস্ক: হবিগঞ্জ জেলার সাবেক পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলী ও সদর থানার সাবেক ওসি মাসুক আলীসহ ৫৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন, লাখাই উপজেলার বিএনপি‘র সাধারণ সম্পাদক ও হবিগঞ্জ জেলা আইনজীবি সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম। হবিগঞ্জ সদর থানার তৎকালীন ওসি মাসুক আলী, ওসি তদন্ত দৌস মোহাম্মদ, ওসি অপারেশন নাজমুল হোসেন কামাল ও ডিবি‘র ওসি আল-আমিনসহ ৫৫ জনের নাম উল্লেখ করে অভিযোগ দায়ের করেন।
রোববার ৩রা নভেম্বর-২০২৪ইং তারিখ সকালে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ দেলোয়ার হোসেনের আদালতে এ মামলাটি দায়ের করা হয়। আদালত মামলাটি আংশিক শুনানি শেষে অধিকতর শুনানির জন্য ৫ই নভেম্বর দিন ধার্য্য করেছেন। অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম মামলা দায়েরের বিষয়টি গনমাধ্য‘কে নিশ্চিত করেছেন ।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২২ ডিসেম্বর বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি জনসভার আহ্বান করে। হবিগঞ্জ পৌরসভার মাঠ অথবা চিলড্রেন পার্কটিতে জনসভা করার অনুমতি চাওয়া হলে অনুমতি দেয়নি তৎকালীন মেয়র আতাউর রহমান সেলিম। অনুমতি না পেয়ে শায়েস্তানগরের জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে জনসভা করার সিদ্ধান্ত নেয়। লিখিতভাবে পুলিশ সুপারকে অবহিত করা হয়।
সকাল থেকে অস্থায়ী পার্টি অফিসের সামনে একটি ছোট মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হলে পুলিশ বাধা দেয়। গলির পূর্ব ও পশ্চিম মুখে পুলিশ ব্যারিকেড দিতে শুরু করে। দুপুর ১২টার দিকে কেন্দ্রীয় নেতার অর্থাৎ বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি ও মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি ও চীফ হুইপ জনাব জয়নাল আবেদীন ফারুক, যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলসহ কেন্দ্রীয় নেতারা সভাস্থলে উপস্থিত হয়। সভাস্থলে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী জড়ো হতে শুরু করে। তবে পুলিশ হবিগঞ্জ শহরের সব প্রবেশ মুখে চেকপোস্ট বসিয়ে সভাস্থলে আসা নেতা-কর্মীদের আটক ও হয়রানি করতে থাকে।
এদিকে ছাত্রদলের শান্তিপূর্ণ মিছিল আসতে থাকলে,পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলীর নির্দেশে উপস্থিত বিপুলসংখ্যক পুলিশ ছাত্রদলের মিছিলের ওপর একপর্যায়ে চালানো হয় নির্বিচারে গুলি। এতে ৩ শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন। গুলিতে আহত বহু নেতাকর্মী চিকিৎসা নিতেও হয়রানীর শিকাড় হতে হয়েছে। ছাত্রদলের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ্ রাজীব আহম্মেদ রিংগনের শরীর ঝাঁজরা হয়ে যায় গুলিতে। ছাত্র দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমানের চোখে গুলির আঘাতে তার ডান চোখ নষ্ট হয়ে যায়। গুলিতে হবিগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচিত কাউন্সিলর সফিকুর রহমান সেতু, আশরাফুল আলম সবুজ, ইয়ামিন মিয়া, তৌহিদুর রহমান অনি, নাজমুল হোসেন অনিসহ অনেকে গুরুতর আহত হয়।
এ ঘটনায় হবিগঞ্জ সদর থানায় মামলা করতে গেলে, থানা কর্তৃপক্ষ মামলা গ্রহণ করেনি। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা বাদীসহ প্রত্যক্ষদর্শীকে ভয়ভীতিসহ হত্যা মামলা দায়েরের ভয় দেখান বলে অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম প্রকাশ করেন ।