
বিশেষ প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জ শহরের স্টাফ কোয়ার্টারস্থ মানিক চৌধুরী পাঠাগারের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দরিদ্র শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পাঠাগার পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাবেক অধ্যক্ষ ইকরামুল ওয়াদুদ, দাতা ও সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, লেখক ও গবেষক শেখ ফজলে এলাহী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুজ জাহের,বীর মুক্তিযোদ্ধা রাজিয়া খাতুন, পাঠাগার পরিচালনা কমিটির সদস্য অনুপ কুমার দেব মনা, সমাজ সেবক আব্দুল হাসিব চৌধুরী, তানসিন আমিন প্রমুখ। পরে পাঠাগারে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
কমান্ড্যান্ট মানিক চৌধুরী ( ২০ ডিসেম্বর ১৯৩৩ – ১০ জানুয়ারি ১৯৯১ )
তিনি একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ অবদানের জন্য তিনি ২০১৫ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন।
জন্ম : ২০ ডিসেম্বর ১৯৩৩। বাহুবল, হবিগঞ্জ।
মৃত্যু : ১০ জানুয়ারি ১৯৯১। ঢাকা।
জাতীয়তা : বাংলাদেশী।
জাতিসত্তা : বাঙালি।
নাগরিকত্ব : বাংলাদেশ।
যে জন্য পরিচিত : মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ।
ধর্ম : ইসলাম।
পুরস্কার : স্বাধীনতা পুরস্কার (২০১৫)।
জন্ম ও পারিবারিক পরিচিতি :
তিনি ১৯৩৩ সালের ২০ ডিসেম্বর হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার সন্তান এডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী সংসদ সদস্য হিসাবে হবিগঞ্জ জেলার প্রতিনিধিত্ব করেন।
বৃহত্তর সিলেটে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় বিশেষ ভূমিকা রাখেন তিনি; মুক্তিযুদ্ধের সম্মুখ সমরে সরাসরি অংশগ্রহণের পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধাদেরও সংগঠিত করেন তিনি।
“কমান্ড্যান্ট” উপাধী লাভ :
মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করতে অস্ত্রের প্রয়োজন তার নেতৃত্বে হবিগঞ্জ সরকারি অস্ত্রাগার লুট করা হয় এবং এপ্রিলের প্রথম দিকে সরাসরি অংশ নেন সিলেট অঞ্চলের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী ও বড় যুদ্ধ হিসাবে পরিচিত শেরপুর-সাদিপুর যুদ্ধে।
সম্মুখ সমরে অংশ নেয়ার পাশাপাশি ৩ নং ও ৪ নং সেক্টরে সৈন্য, অস্ত্র, খাদ্য সরবরাহসহ ভারতের খাৈয়াই ও কৈলাশহরের মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ প্রশিক্ষণের দায়িত্ব পালন করায় মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে চীফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল এম. এ. রব তাকে সিভিলিয়ান হওয়া সত্ত্বেও “কমান্ড্যান্ট” উপাধিতে ভূষিত করেন।
তিনি ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে হবিগঞ্জ থেকে এম.এন.এ. এবং ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পাশাপাশি ছিলেন হবিগঞ্জ মহুকুমার গভর্ণরও।
তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর প্রতিবাদের জন্য মানিক চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে চার বছর কারারুদ্ধ করে রাখা হয়।
তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে যথাযথ চিকিৎসা, এমনকি একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়েও পিজি হাসপাতালে কোনো ওয়ার্ডে একটি সিট বরাদ্দ পাননি। এমতাবস্থায় ১৯৯১ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
“শ্যামল” প্রকল্পের জন্য তিনি ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এর নিকট থেকে “বঙ্গবন্ধু কৃষি পদক” গ্রহণ করেন।
স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তাকে ২০১৫ সালের “মরণোত্তর” স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করা হয়।