এম. এম আলফাজ সর্দারঃ হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাটে চাঞ্চল্যকর অটোচালক তাজুল হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। অটো চালানোর সিরিয়াল নিয়ে মতবিরোধকে কেন্দ্র করে মূলত এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
আটক আসামী মিজান গত ০৪ জুলাই সন্ধ্যায় হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা হককে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। পরে রাত ১০ টার দিকে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়।
আটক মিজানুর রহমান উপজেলার কালিচং এলাকার আব্দুর রশিদের ছেলে। মূল পরিকল্পনাকারী আফিল উদ্দিন সদর ইউনিয়নের গোলগাল গ্রামের মস্তই মিয়ার ছেলে। আফিল উদ্দিন বর্তমানে পৌর শহরের চন্দনা এলাকায় বসবাস করছেন। যদিও আফিল উদ্দিন আদালতে দায় স্বীকার করেননি।
জবানবন্দিতে মিজান জানায়, আফিল উদ্দিনের পরিকল্পনায় মিজান ১৫০ টাকায় চুনারুঘাট দক্ষিণ বাজারের স্ট্যান্ড থেকে তাজুল ইসলামকে চান্দপুর বাজারে যাওয়ার কথা বলে ভাড়া করে নিয়ে যায়। এসময় মিজান তাজুলকে বলে তার অটোটি বিকল হয়েছে গিলানী চা বাগানে। তার অটোটি টেনে আনার কথা বলে তাজুলকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে নিয়ে গলায় রশি বেঁধে আফিল উদ্দিনসহ অজ্ঞাত সহযোগীদের নিয়ে তাজুলকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়। পরে তার অটোর ব্যাটারি খুলে নিয়ে শায়েস্তাগঞ্জ একটি দোকানে ২২ হাজার টাকায় বিক্রি করে মিজানকে ১৯ হাজার টাকা দেয়।
গত ২৫ জুন চুনারুঘাট পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের মো: আলফু মিয়ার ছেলে মো. তাজুল ইসলাম ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ে বের হয়। রাতে বাড়ি না ফেরায় তার পরিবার অনেক খোঁজাখুঁজি করেন। পরদিন ২৬ জুন সাংবাদ মাধ্যমে জানতে পারেন গত ২৫ জুন বিকেল সাড়ে ৫টায় গিলানী চা-বাগানের অভ্যান্তরে গলায় রশি পেছানো মৃত অবস্থায় লাশটি পড়ে থাকে। স্থানীয়রা চুনারুঘাট থানা পুলিশকে খবর দিলে চুনারুঘাট থানার ওসি মোঃ আলী আশরাফ লাশটি উদ্ধার করেন।
পরে এসআই আব্দুল মোতালেব সুরতহাল করে লাশটি হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে মর্গে প্রেরণ করেন। ২৬ জুন শনিবার দুপুরে লাশের পরিচয় পাওয়া গেলে লাশটি স্বজনদের কাছে হস্থান্তর করা হয়। এরপর তার বাবা আলফু মিয়া বাদী হয়ে চুনারুঘাট থানায় অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের ৭ দিনের মধ্যে হত্যার রহস্য উন্মোচন ও আসামীদের গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই তরিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আটক আফিল উদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। আফিল উদ্দিন কিছুদিন অটোর সিরিয়াল ম্যানের দায়িত্বপালন করাকালে সিরিয়াল নিয়ে ঘটনার প্রায় মাস খানেক পুর্বে আফিল উদ্দিনের সঙ্গে চালক তাজুলের বাকবিতণ্ডা হয়। এ নিয়ে বিচার সালিসও হয়েছে। এরপর থেকে তাজুলকে হত্যা করতে পরিকল্পনা করে আফিল উদ্দিন।
এই হত্যাকান্ড কে ঘিরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসছে তাজুলের পরিবারে ও এলাকাবাসীদের মধ্যে । সু-বিচার পাওয়ার অপেক্ষার পহর গুনছে তাজুলের পরিবারের সদস্যরা ।