হাতে কয়েক গুচ্ছ স্বপ্ন ! – বশির আহমদ

0
63

রোজার মাস। গরমের ঘনঘটা। দীর্ঘ সফরের ক্লান্তির মাত্রা একটু বেশ। অস্বস্তিকর পরিবেশে স্বস্তির আশায় ব্যর্থ নিদ্রায় পথের দূরত্ব কাটছিল, আধো নিদ্রায়, এবং কাকনিদ্রায়। সফরের চাপ রীতিমতো পড়ছে চেহারায়। চুলগুলো উসকোখুসকো। জামাকাপড় ধুলোয় ধূসরিত। ঘর্মাক্ত শরীরের কথা আর না-ই বললাম। এতো সময় হাওয়ার ওপর চলে গেলো, বুঝতেই পারলাম না। কোনো দৃশ্যপট আমাকে কল্পনাজগতে নিতে পারলো না। তবে দৃশ্যের পর দৃশ্যের ক্রমাগত পরিবর্তন পরিবর্ধন প্রতিনিয়ত। হৃদয় হরণ করার দৃশ্য কমই আসে। এই আসাটাও সবার জন্য নয়, কেবল চিন্তাশীলদের জন্য। আবার, সবার চিন্তার ধরনও কিন্তু এক নয়। কেউ রাতকে মনে করে অন্ধকার। কেউ ভাবে অদৃশ্য একটা আবরণ। আমি ভাবি সূর্যের অনুপস্থিত। তফাৎ এখানেই। হকারের হাতে বাদাম বা অন্যকিছুর ছোট্ট পলিথিনে থাকা জিনিসকে মনে করে পুটলা। আমি ভাবি এগুলো বেঁচে থাকার স্বপ্ন। এমনই অনেকগুলো স্বপ্ন হাতে নিয়ে বাসে উঠলো একটি শিশু। হাস্যজ্জ্বল, ফুটফুটে চেহারা। দেখতে ভালোই লাগছিল। তার হাতে বেশ কয়েকটি নাগা মরিচের ছোট ছোট পুটলা(ব্যাগ)। খুব দরদী কন্ঠে ডেকে ডেকে বিক্রি করছে। তার অনুপম আচরণ দেখে একদিকে যেমন ভালো লাগছিল, অন্যদিকে খারাপ লাগছিল বেশ। কারণ, এই বয়সে থাকার কথা ছিল মায়ের মায়ার আঁচল নিচে। থাকার কথা ছিলো বিদ্যালয়ে। কিন্তু না, সে সেখানে স্বপ্নকে তালাশ করছে, মরিচ কিংবা বুট বাদামের পুটলায়। তার কাছে একটা পুটলা মানে, ছোট ভাই বোনের একচিলিক হাসি! মা বেঁচে থাকার ঔষধ! পরিবারের একবেলার দু’মুটো ভাত! এ দায় কে নেবে আজ? বিত্তবানদের হৃদয় কি স্পর্শ করবে, ঐ দৃশ্যপট? তারা কি বুঝিয়ে দেবে, ঐসব শিশুদের প্রাপ্য? তাই, যাকাত দিন বিধি অনুসারে। কার্পণ্য পরিহার করুন অতিশিগ্রই। কারূণেরও ধন ছিল, মন ছিল না মোটেও। এজন্য তার ধনসম্পদ তার জন্য কাল হয়েছিল। আজও মানুষের জন্য শিক্ষার জ্বলন্ত প্রমাণ হয়ে আছে। সিদ্ধান্ত আপনার, ধনসম্পদ কি নিজের খুশিমতো ভোগ করবে নাকি গরীব অসহায়দের ন্যায্য পাওনা তাদের কে বুঝিয়ে দেবে? যদি দেন, তাহলেই ফিরে আসবে সাম্যের সোনালী সমাজ। খোলাফায়ে রাশেদীনের রাজ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here